ক্যানবেরা: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে (australian beach) পড়ে থাকা রহস্যময় বস্তুটি আদতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র  PSLV রকেটেরই অংশ, নিশ্চিত ভাবে জানিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়ান স্পেস এজেন্সি (Australian Space Agency)।  তবে ইসরোর তরফে এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে ইসরোর রকেটের অংশ এল কী ভাবে? আপাতত অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশ্ন। যদিও বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। মহাকাশ অভিযানের ব্যর্থতা তো নয়-ই। যে কোনও অভিযানের সময়ই রকেট বা রকেটের অংশ নিচে পড়ে যেতে থাকে। সে দিক থেকে দেখলে এটিও অভাবনীয় কিছু নয়। 



কী জানা গেল?
মহাকাশে যখন উপগ্রহ পাঠানো হয়, তখন শুধু উপগ্রহটিই কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়া হয়। রকেটের বিভিন্ন অংশ মহাকাশে যাওয়ার পথে খসে পড়তে থাকে। তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার ব্যবস্থাও থাকে। এমনকি, গতকাল যে উপগ্রহ নিয়ে ইসরোর অভিযান হল, তাতেও রকেট ছিল PSLV।  সেরকমই একটি PSLV-র থার্ড স্টেজ অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে পাওয়া গিয়েছিল চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে। তবে এটি সরাসরি সমুদ্রতটে এসে পড়েছিল নাকি সমুদ্রের জল থেকে ভেসে সৈকতে আসে, তা এখনও জানা যায়নি। আপাতত দু'মিটার লম্বা ওই বস্তুটি অস্ট্রেলিয়ার 'স্টোরেজ'-এ রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাকাশ সংক্রান্ত চুক্তি মেনে এই বস্তুটি নিয়ে কী করা হবে, সে ব্যাপারে আলোচনা করছে দুই দেশ।  

ফিরে দেখা...
চলতি মাসের মাঝামাঝি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার 'জুরিয়েন বে'-তে তামার রংয়ের একটি বস্তু পড়ে থাকেন স্থানীয়রা। তার হাল বেশ খারাপ। একদিকে বেঁকে ছিল সেটি। কোথা থেকে এল এই বস্তু? শুরু হয় জল্পনা। কেউ কেউ বলতে শুরু করেন, নিখোঁজ মালয়েশিয়ান বিমান MH370-র অংশ এটি। তবে স্থানীয় পুলিশ মোটামুটি জানিয়ে দিয়েছিল যে, এটি কোনও বাণিজ্যিক বিমানের অংশ নয়। যদিও কোথা থেকে এল, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান ছিলেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে তাই এটিকে 'বিপজ্জনক বস্তু' হিসেবে ধরে নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশের তরফে জানানো হয়, দমকল বিভাগের রসায়ন দফতর বস্তুটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। এবং সেই পরীক্ষালব্ধ ফলাফল জানাচ্ছে, এই ধাতব সিলিন্ডার নিরাপদ। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোনও ক্ষতির আশঙ্কাও নেই এই পদার্থ থেকে। তবে তখনও পর্যন্ত দ্ব্যর্থহীন ভাবে বস্তুটির উৎস এবং পরিচয় জানা যায়নি। সেই কাজ হলেই সৈকত থেকে সরানো হবে রহস্যময় ধাতব সিলিন্ডারটিকে। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে, সাধারণ বাসিন্দাদের এই বস্তু থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছিল। রহস্যের খাসমহল যখন দানা বাঁধছে, তখনই স্পেস আর্কিওলজির বিশেষজ্ঞ, অ্যালিস গোরম্যান মন্তব্য করেন, এটি ইসরো-র (ISRO) পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল রকেটের তৃতীয় পর্যায়ের খণ্ডাংশ। সোমবার কার্যত সেই দাবিতেই সিলমোহর দিল অস্ট্রেলিয়ান স্পেস এজেন্সি। 


 


আরও পড়ুন:বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর 'শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি, সংক্রমণ কমেছে অর্ধেকেরও বেশি'