নয়াদিল্লি: মহাশূন্যের বুকে আরও এক নয়া গ্রহের সন্ধান মিলল। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এই নয়া গ্রহের আবিষ্কার করলেন। নায় আবিষ্কৃত গ্রহটির নাম TOI-6651b. আমাদের সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত নয়া আবিষ্কৃত গ্রহটি, অর্থাৎ সেটি একটি Exoplanet. সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রকে গ্রহটি প্রদক্ষিণ করে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। (New Planet Discovery)
ভারতের Physical Research Laboratory (PRL)-এর বিজ্ঞানীরা এই নয়া গ্রহের আবিষ্কার করেছেন। অত্যাধুনিক PARAS-2 স্পেকটোগ্রাফের মাধ্যমে নয়া গ্রহটির সন্ধান মিলেছে। TOI-6651b গ্রহটি উচ্চ ভরযুক্ত বলে জানিয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। আয়তনের দিক থেকে সৌরজগতের বাসিন্দা শনির সঙ্গে নয়া গ্রহটির মিল রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই নিয়ে PRL-এর বিজ্ঞানীরা ষষ্ঠতম Exoplanet-এর আবিষ্কার করলেন। মহাকাশ গবেষণার জগতে ভারতের অবদান যে লাগাতার বেড়ে চলেছে, এই আবিষ্কারই তার প্রমাণ। (New Exoplanet TOI-6651b)
TOI-6651b কোনও সাধারণ গ্রহ নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বলা হয়েছে, পৃথিবীর তুলনায় ওই গ্রহের ভর ৬০ গুণ বেশি। আয়তনেও পৃথিবীর তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বড়। Neptunian Desert-এর একেবারে কিনারায় নয়া গ্রহটির সন্ধান মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। ওই এলাকায় এই আয়তনের গ্রহের সন্ধান আগেও পাওয়া গিয়েছে।
Neptunian Desert সৌরজগতের গ্রহ নেপচুনের মরুভূমি নয় মোটেই। বরং মহাশূন্যের বুকে নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত একটি অঞ্চল, যেখানে নেপচুনের আকারের কিছু গ্রহের উপস্থিতি রয়েছে। ওই অঞ্চলে নক্ষত্রের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে গ্রহগুলি। নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে ২ থেকে চারদিনেরও কম সময় নেয় তারা। নক্ষত্রের বিকিরণে সুদীর্ঘকাল টিকে থাকে না গ্রহগুলি। একটা সময় পর গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডল কার্যত উবে যায়। পড়ে থাকে শুধু পাথুরে অন্তঃস্থল।
নয়া আবিষ্কৃত TOI-6651b গ্রহটি সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রের চারিদিকে ছুটে চলেছে। নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে সেটি পাঁচ দিন সময় নেয়। অর্থাৎ ওই গ্রহে একবছর হিসেবে গন্য হয় যে সময়সীমা, তা পৃথিবীর এক সপ্তাহেরও কম। গ্রহটির কক্ষপথ খানিকটা ডিম্বাকৃতির। তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, TOI-6651b গ্রহটি TOI-6651 নামের নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। সেটি একটি G-type sub-giant নক্ষত্র। অর্থাৎ সূর্যের চেয়ে তার আয়তন এবং তাপমাত্রা অনেক বেশি। সেখানকার তাপমাত্রা প্রায় ৫৯৪০ কেলভিন।
TOI-6651b গ্রহটির মোট ভরের ৮৭ শতাংশই পাথর এবং লৌহসমৃদ্ধ খনিজ বলে জানা গিয়েছে। হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের আস্তরণ মুড়ে রেখেছে গ্রহটিকে। তবে চিরকাল গ্রহটি এমন ছিল না, তার বিবর্তন ঘটেছে বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাঁদের দাবি, অন্য এক বা একাধিক মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে মিশে যায় গ্রহটি। ফলে সূচনাপর্বের সেই পরিবেশ আর বিদ্যমান নেই গ্রহটিতে।
গ্রহের সৃষ্টি নিয়ে চিরাচরিত যে তত্ত্ব রয়েছে, তার পরিপন্থী এই আবিষ্কার। এত বড় এবং উচ্চ ভরযুক্ত গ্রহের টিকে থাকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, TOI-6651b গ্রহটিকে নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। সেখানকার গ্রহমণ্ডল সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে হবে। তবে এই আবিষ্কার ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।