নয়াদিল্লি:  শুধুমাত্র চাঁদ বা পৃথিবীতেই থেমে নেই অনুসন্ধান। তার বাইরেও প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাতে এবার বড় সাফল্য পেল আমেরিকার গবেষণা সংস্থা NASA. বৃহস্পতির বরফাবৃত উপগ্রহ ইউরোপায় কার্বন ডাই অক্সাইডের সন্ধান পেল তারা। আর তাতেই হিমশীতল ওই উপগ্রহে প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ থাকতে পারে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। (Science News)


আয়তনে চাঁদের চেয়ে কিছুটা ছোট ইউরোপা। বরফের কঠিন আবরণ ঢেকে রয়েছে তার বুকে থাকা লবণাক্ত মহাসাগর। তরল অবস্থায় জলের উপস্থিতি থাকাতেই এই মুহূর্তে মহাশূন্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বস্তু হয়ে উঠেছে ইউরোপা। তরল জলের অস্তিত্বের টের পাওয়া গেলেও, জলে ঠিক কী অণু রয়েছে, তা এতদিন জানা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। এবার সেই ধন্দ কাটল। কার্বনের উপস্থতি পাওয়া গেল সেখানে। (Space Science)


পৃথিবীতে প্রাণসৃষ্টির নেপথ্যে অন্যতম উপাদান কার্বন। NASA-র জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ইউরোপায় কার্বন ডাই অক্সাইডের হদিশ পেয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বাইরে থেকে তা ইউরোপায় এসে পৌঁছয়ন, কোনও গ্রহাণু বয়ে আনেনি। বরং ইউরোপার বুকে নবগঠিত যে ‘টারা রেগিও’ অঞ্চল রয়েছে, সেখানে প্রাকৃতিক ভাবেই কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয়েছে।


আরও পড়ুন: Science News: রোদ ঝলমল অর্ধেক, বাকি অর্ধেক ঢাকা আঁধারে, জলবিষুবের দিন ফ্রেমবন্দি পৃথিবীর দুই রূপ


কর্নেল ইউনিভার্সিটির গ্রহ বিষয়ক বিজ্ঞানী সামান্থা ট্রাম্বো বলেন, “এর আগে, হাবল টেলিস্কোপ টারা রেগিওতে সামুদ্রিক লবণের হদিশ পেয়েছিল। এবার ভাল মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইডের খোঁজ মিলল। সমুদ্রগর্ভ থেকেই তার উৎপত্তি ঘটেছে বলে অনুমান আমাদের।”


ইউরোপা নিয়ে সম্প্রতি দু’টি  গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে একটি লিখেছেন সামান্থা। ২১ সেপ্টেম্বর জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে সেটি। জানা গিয়েছে, ইউরোপার বুকে স্ফটিকাকার এবং নিরাকার কার্বন, দুইয়েরই খোঁজ মিলেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ইউরোপার মাটির বয়স অন্তত ৬ কোটি বছর। 


আগামী দিনে ইউরোপার উদ্দেশে দু'টি অভিযানের লক্ষ্য রয়েছে। ২০২৪ সালে তাদের ক্লিপার অভিযানের সূচনা হবে। কক্ষপথ থেকে ইউরোপাকে পর্যবেক্ষণ করবে মহাকাশযানটি। সেখানে প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখবে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি-র জুপিটার আইসি মুন এক্সপ্লোরার (Juice) আগামী বছর এপ্রিলে রওনা দেবে ইউরোপার উদ্দেশে। ২০৩১ সালে ইউরোপার কাছাকাছি পৌঁছবে সেটি। বৃহস্পতির তিনটি গ্রহ, ইউরোপা, গানিমিড এবং ক্যালিস্টোর চারপাশে ৩৫ বার চক্কর কাটবে।