নয়াদিল্লি: আটদিনের সফরে গিয়ে যখন মাসের পর মাস মহাকাশে আটকে ছিলেন তাঁরা, সেই সময় সুনীতা উইলিয়ামসকে নিয়ে বিস্তর চর্চা হলেও, তাঁর সহযাত্রী, বিপদের সঙ্গী, ব্যারি বুচ উইলমোরকে নিয়ে আগ্রহ তুলনামূলক কম ছিল। মহাকাশ গবেষণার জগতে অত্যন্ত পরিচিত নাম ব্যারি। এবার অবসরগ্রহণের ঘোষণা করলেন তিনি। ২৫ বছরের কর্মজীবনে ইতি টানলেন। (Sunita Williams)
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ব্যারি। পাশাপাশি, আমেরিকার নৌবাহিনীরও টেস্ট পাইলট তিনি। মহাকাশে ৪৬৪ দিন কাটানোর রেকর্ড রয়েছে তাঁর। সবমিলিয়ে ৩২ ঘণ্টার, পাঁচটি স্পেসওয়াকের রেকর্ডও রয়েছে। কিন্তু নৌবাহিনীর বিমান ওড়ানো থেকে মহাকাশে রওনা, সুদীর্ঘ কেরিয়ারে একের পর এক উচ্চতা ছুঁয়েছেন ব্যারি, একেবারে নীরবে। (Barry Butch Wilmore)
তবে গত বছরই খবরের শিরোনামে জায়গা করে নেন ব্যারি। গত বছর ৫ জুন আমেরিকার নৌবাহিনীরই প্রাক্তন অফিসার, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতার সঙ্গে বোয়িং স্টারলাইনার যানে চেপে মহাকাশে রওনা দেন ব্যারি। মাত্র আট দিনের অভিযানে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায়, প্রায় সাড়ে ন’মাস মহাকাশে আটকে পড়েন ব্যারি ও সুনীতা। তাঁদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে, প্রহর গুনতে শুরু করেন সকলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ SpaceX-এর মহাকাশযানে চেপে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন ব্যারি ও সুনীতা।
এর পর কয়েক মাস যেতে না যেতেই অবসরের ঘোষণা করলেন ৬২ বছর বয়সি ব্যারি। NASA জানিয়েছে, দীর্ঘ ২৫ বছর চারটি ভিন্ন ভিন্ন মহাকাশযান উড়িয়ে, মহাকাশে ৪৬৪ দিন কাটিয়ে NASA থেকে অবসর নিলেন মহাকাশচারী তথা টেস্ট পাইলট ব্যারি বুচ উইলমোর। ওঁকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানান সকলে। এত বছর ধরে NASA এবং আমেরিকার যে সেবা করে গিয়েছেন ব্যারি, তার জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করা হয়।
মহাকাশের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে ব্যারি বলেন, “ছোট থেকেই সৃষ্টির প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। আকাশের দিকে ঠায় তাকিয়ে থাকতাম। ওই কৌতূহলই আমাকে আকাশে উড়তে শেখায়, মহাকাশে নিয়ে যায় শেষ পর্যন্ত। মহাকাশে স্রষ্টার যে মহিমা চাক্ষুষ করি, তা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়। পৃথিবী ছাড়িয়ে বেরিয়ে গেলেও, পৃথিবীর সৌন্দর্য, প্রাণের বুননেও বিভোর ছিলাম আমি।” ব্যারিকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন NASA-র বিজ্ঞানীরা।