নয়াদিল্লি: পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে আর বাকি নেই এক সপ্তাহও। চাঁদ কী করে সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দেয়, তা দেখতে মুখিয়ে রয়েছে গোটা পৃথিবী। তবে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ বা বিজ্ঞান-উৎসাহী মানুষজন নন, মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের কাছেও ৮ এপ্রিল দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী হবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ, তার মধ্যেই রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালাতে চলেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. (Total Solar Eclipse)


আগামী ৮ এপ্রিল ৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের জন্য সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দেবে চাঁদ। ওই সময়ের মধ্যেই সরাসরি চাঁদের ছায়ায় তিনটি রকেট প্রবেশ করাতে চলেছে NASA. ভার্জিনিয়ায় NASA-র বিজ্ঞানীরা এই অভিযান চালাতে চলেছেন। ওই কয়েক মিনিটে সূর্যালোকের অভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপর কী প্রভাব পড়ে, তা পর্যবেক্ষণ করাই লক্ষ্য NASA-র। (Science News)


পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় পৃথিবীতে তার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তাপমাত্রা একধাক্কায় নেমে আসে যেমন, তেমনই দিনের বেলা আঁধার নেমে আসায় পশুপাখিদের মধ্যেও অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করা যায়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০-৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে আয়নোস্ফিয়ারের উপরও প্রভাব পড়ে। কিন্তু সেই সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই বিজ্ঞানীদের। সেই কারণেই ওই কয়েক মিনিট সময়টিকে পপর্যবেক্ষণের জন্য বেছে নিয়েছে NASA.


আরও পড়ুন: Most Powerful MRI Scanner: রোগের কারণ, ওষুধের প্রতিক্রিয়া, অধরা থাকবে না কিছুই, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী MRI স্ক্যানার


সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মি নিয়মিত ভাবে পরমাণু থেকে ইলেক্ট্রনগুলিকে দূরে সরিয়ে দেয়। এর ফলে বৈদ্যুতিক শক্তিসম্পন্ন কণার সৃষ্টি হয়, যার সংস্পর্শে এসে বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তর ফুলেফেঁপে ওঠে। সূর্যাস্তের পর আবার পাতলা হয়ে যায় বায়ুমণ্ডলের ফুলেফেঁপে থাকা ওই স্তর। ওই সময় আয়নগুলি পরমাণুর সঙ্গে মিশে যায়, যা পরদিন ভোরে আবারও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরস্পরের থেকে। কিন্তু ওইটুকু সময়েই পৃথিবীতে রেডিও এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন বাধাপ্রাপ্ত হয়।  


পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের আগে, পূর্ণগ্রাস মুহূর্তের সময় এবং তার পর মোট তিনটি রকেট উৎক্ষেপণ করবে NASA. ওই সময় ঠিক কী প্রভাব পড়ে বায়ুমণ্ডলের উপর, তা পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। এর আগে, গতবছর অক্টোবর মাসেও একই ধরনের পরীক্ষা চালায় NASA. সেই সময় চাঁদ সূর্যকে ঢেকে দেওয়ার সময় চার পাশে যে উজ্জ্বল বলয় দৃশ্যমান ছিল পৃথিবী থেকে। ওই গবেষণায় দেখা যায়, সূর্যালোক সামান্য বাধাপ্রাপ্ত হলেও পৃথিবীতে রেডিও এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন বিঘ্নিত হয়। আগের মতো একই উচ্চতা থেকে ওই বাধার সৃষ্টি হয় কি না, তা দেখতে আগ্রহী NASA-র বিজ্ঞানীরা।