নয়া দিল্লি: সৌররশ্মি থেকে অতিচৌম্বকীয় রশ্মি হোক কিংবা অতিবেগুনি রশ্মি, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে এই সব রশ্মি শোষিত হয়ে তাদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে বিশ্বপ্রাণের আধারকে। তবে এবার অন্য আরেক রশ্মির প্রভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে পৃথিবী, এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসা একটি ছবি এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর থেকে বহু আলোকবর্ষ দূরের একটি সুপারনোভার বিস্ফোরণ ঘটেছে। আর সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে এক্স-রে। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি এবং অন্যান্য টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এই বিস্ফোরণের বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, শত আলোকবর্ষে দূরের একটি তারামণ্ডলের বিস্ফোরণের জেরে সেখান থেকে ধেয়ে আসছে এক্স-রশ্মি।
এর প্রভাব দেরিতে হলেও পৃথিবীতে পড়বে। এখন চিন্তার বিষয় হল সুপারনোভা ব্লাস্টে একটু আধটু নয়। এক্স-রে রশ্মির বড়সড়ো বিস্ফোরণ ঘটেছে। তার পরিধি এবং বিরাটত্বও অনেকটাই। যার প্রভাব সরাসরি পড়তে চলেছে পৃথিবীতে। মানবদেহের পক্ষে অতিরিক্ত এক্স-রে রশ্মি আদতেই ক্ষতিকর। সেখানে যদি এত বেশি পরিমাণ এক্স-রে পৃথিবীতে আসতে থাকে তবে তা গোটা প্রাণীকূলকে বিলুপ্ত করার পক্ষে যথেষ্ট বলেই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন, কাজের চাপে গাছেরাও কাঁদে! বৃক্ষের আর্তনাদ রেকর্ড করলেন বিজ্ঞানীরা
নাসার তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'যত এমন এক্স-রে ঝড় কোনও পার্শ্ববর্তী সুপারনোভায় তৈরি হয়। তাহলে এর বিকিরণ মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে পৃথিবীতে। বদলাবে বায়ুমণ্ডলীয় রাসায়ানিক বিক্রিয়া। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে প্রাণীজগতের ওপর। এক্স-রে রশ্মি যেই মুহূর্তে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে সেই সময় ওজনস্তরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তা নষ্ট করতে শুরু করবে। এই ওজনস্তরের জন্যই মহাকাশের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে বেঁচে আছে প্রাণীকূল। সেই স্তরই যদি ধ্বংস হতে শুরু করে তাহলে এরপর প্রাণীকূলে প্রভাব পড়তে পারে।'
মহাকাশবিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই ৩১টি সুপারনোভা নিয়ে গবেষণা করছেন। সুপারনোভাতে যে গ্রহ, উপগ্রহ, তারা রয়েছে সেখান থেকে ক্ষতিকারক রশ্মি ছড়িয়ে পড়তে পারে। ১৬০ আলোকবর্ষ দূরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পৃথিবীর ক্ষেত্রে ওজন স্তরে এই রশ্মি বিক্রিয়া করে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড তৈরি করতে পারে। যা ব্রাউন গ্যাস তৈরি করে জীবকূলকে প্রাণ সংশয়ের মুখে ফেলতে পারে।