কলকাতা : সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, আন্টার্কটিকা ওজন গহ্বরটি (Ozone Hole) বিগত ৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ওজন গহ্বর। আন্টার্কটিকার আকাশে যে বিশালাকায় ওজন গহ্বর রয়েছে তার ধারে কাছে নেই অন্য কিছু। তবে শুধু ক্লোরোফ্লুরো কার্বন নয়, বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এই ওজন গহ্বরে আরও অনেক অজানা উপাদান।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল ওজন স্তর। সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে নেয় এই ওজন স্তর। ফলে, প্রাণী এবং উদ্ভিদ জগৎ নিরাপদ থাকে। পৃথিবীপিষ্টে তাপমাত্রার ভারসাম্যও বজায় থাকে। কিন্তু আন্টার্কটিকার উপর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের এই ওজন স্তরেই একটি বৃহদাকারের গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে বিষয়টি সামনে এসেছে। আর তাতেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
মূলত কার্বন, মিথেন, ফ্লুরিন, ক্লোরিন এবং হাইড্রোজেন মিলিয়েই তৈরি হয় ক্লোরোফ্লুরো কার্বন গ্যাস যা ওজন ক্ষয়ের অন্যতম কারণ। নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হানাহ কেসেনিকের মতে, ১৯ বছর আগে এই অংশে যত পরিমাণ ওজন গ্যাস ছিল তার থেকে বর্তমানে এই গহ্বরের (Ozone Hole) কেন্দ্রে ওজনের পরিমাণ অনেকাংশে কমে গিয়েছে। ফলে, বোঝাই যাচ্ছে এই গহ্বরটি আয়তনগতভাবে বিশাল, একইসঙ্গে গভীরতাও এর অনেক বেশি।
এবছর ১৬ সেপ্টেম্বর তোলা ছবিতে এযাবৎকালীন অন্যতম বৃহৎ গহ্বরটি (Ozone Hole) দেখা গিয়েছে ওজন স্তরে, যার আয়তন প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। ইউরোপিয় স্পেস এজেন্সি বিষয়টি সামনে এনেছে। তাদের কোপারনিকাস সেন্টিনেল-৫পি স্যাটেলাইটের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে গহ্বরটি। এই গহ্বর সৃষ্টির জন্য টঙ্গায় সমুদ্রের নীচে থাকা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২২ সালে সেখানে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। ক্ষমতার নিরিখে তা হিরোশিমায় ফেলা ১০০টি পরমাণু বোমার সমান ছিল বলে মত বিজ্ঞানীদের।
গবেষকরা ২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বছরের বিভিন্ন সময় মাসিক এবং দৈনিক দু'ভাবেই এই অংশের ওজনের পরিমাণ এবং গহ্বরের আয়তন পর্যবেক্ষণ করেছেন নিখুঁতভাবে। এর থেকে গবেষকরা এক অদ্ভুত সূত্র খুঁজে পেয়েছেন। মেরুপ্রদেশের শীর্ষে ওজনের পরিমাণ এবং বাতাসের গুণমান দুইই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে ২০২২ সালে এই ওজন গহ্বরের যা আয়তন ছিল, ২০২৩ সালে এসে এই আয়তন আরও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। বর্তমানে এই গহ্বরের আয়তন ২৬ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার যা কিনা সমগ্র অ্যান্টার্কটিকার আয়তনের দ্বিগুণ।
আরও পড়ুন: সূর্যের সঙ্গেই কি মৃত্যু পৃথিবীর, নাকি ত্রাতা হয়ে উঠবে কৃষ্ণগহ্বর? কী বলছে বিজ্ঞান