Nuclear Reactor on Moon: চাঁদের মাটিতে পারমাণবিক চুল্লির নির্মাণ, হাত মেলাল রাশিয়া ও চিন

Science News: এর আগে, ২০২১ সালে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা CNSA এবং Roscosmos জানিয়েছিল, চাঁদের বুকে যৌথ ঘাঁটি গড়ে তুলতে আগ্রহী তারা।

নয়াদিল্লি: যৌথ উদ্য়োগে  চাঁদের বুকে পারমাণবিক চুল্লি তৈরির পথে রাশিয়া এবং চিন। ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদের বুকে পারমাণবিক চুল্লি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা Roscosmos-এর তরফে এই ঘোষণা করা হল। চাঁদের বুকে নিজস্ব ঘাঁটি গড়ে তুলতে ওই চুল্লি সহায়ক হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছে Rscosmos, যৌথ ভাবে যা পরিচালনা করবে দুই দেশ। (Nuclear Reactor on Moon)

এর আগে, ২০২১ সালে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা CNSA এবং Roscosmos জানিয়েছিল, চাঁদের বুকে যৌথ ঘাঁটি গড়ে তুলতে আগ্রহী তারা। প্রস্তাবিত ওই ঘাঁটির নামও ঘোষণা করা হয়েছিল, International Lunar Research Station (ILRS). তবে শুধু নিজেদের ব্যাবহারের জন্য নয়, বিশ্বের অন্য আগ্রহী এবং সহযোগী দেশও চাইলে ওই ঘাঁটি থেকে চাঁদের বুকে গবেষণা চালাতে পারে বলে বলে জানানো হয় সেই সময়। (Science News)

যদিও আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র মহাকাশচারীদের সেখানে প্রবেশ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। এমনিতে Roscosmos এবং CNSA-র সঙ্গে সম্পর্ক মধুর নয় NASA-র। বিশেষ করে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা। তার জেরে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনও ছাড়তে চলেছে রাশিয়া। তাই চাঁদের বুকে ওই গবেষণা কেন্দ্রে NASA-র মহাকাশচারীদের সেখানে প্রবেশের অধিকার থাকবে না বলে খবর।

 

 

মঙ্গলবার Roscosmos-এর তরফে জানানো হয়, চাঁদের বুকে গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিদ্যুতেরও প্রয়োজন পড়বে। তার জন্যই চিনের সঙ্গে মিলে সেখানে একটি পারমাণবিক চুল্লি গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তারা। Roscomos-এর ডিরেক্টর জেমারেল ইয়ুরি বরিশভ বলেন, "একটি যৌথ প্রকল্প গড়ে তোলা নিয়ে কথা চলছে। ২০৩৩-২০৩৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। চিনা সহযোগীদের সঙ্গে মিলে চাঁদের বুকে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলব আমরা।"ম

 

চাঁদের বুকে পারমাণবিক চুল্লি গড়ে তোলা মোটেই সহজ কাজ নয়। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ওই কার্য সম্পাদন করা হবে। নির্মাণকার্যে মানুষের প্রয়োজন পড়বে না। লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য যে প্রযুক্তির প্রয়োজন, তাও প্রায় তৈরি বলে জানিয়েছে তারা। চাঁদের বুকে পারমাণবিক চুল্লি গড়ে তুলতে পারমাণবিক শক্তিচালিত রকেটে চাপিয়েই জিনিসপত্র পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে রাশিয়ার। তবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই অভিযান। তাই মেপে মেপে প্রতিটি পদক্ষেপ করছে তারা।

 

চাঁদের বুকে পালা করে ১৪ দিন সূর্যালোক এবং ১৪ দিন নিশিকাল থাকে, পৃথিবীর হিসেবে এক চন্দ্রদিবস প্রায় ২৮দিন। অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে টানা ১৪ দিন সেখানে দিন থাকে, আবার টানা ১৪ দিন থাকে রাত। তাই সৌর প্যানেল বসিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা পাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণে ভাবনাচিন্তা করেই পারমাণবিক চুল্লি তৈরি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকে। 

 

তবে শুধুমাত্র চিন বা রাশিয়াই নয়, গত বছর সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরাও চাঁদে পারমাণবিক চুল্লি বসানোর পরিকল্পনার কথা জানান। আগামী দিনের অভিযানের কথা মাথায় রেখে NASA-র তরফে সেই নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হবে বলেও জানানো হয়। এর মধ্যেই রাশিয়া এবং চিনের যৌথ পরিকল্পনার কথা সামনে এল।