নয়াদিল্লি: পৃথিবীর বুকে দুই দেশের মধ্যে চাপানউতোর লেগেই থাকে। মহাকাশেও কোনও রকমে সংঘর্ষ এড়াল আমেরিকা এবং রাশিয়া। মাস দেড়েক আগে মহাশূন্যে তাদের পাঠানো দুই কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধার উপক্রম হয়। মারাত্মক সেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয় একটুর জন্য। আর তাতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে দুই প্রবল শক্তিধর রাষ্ট্র। (Space Collision Avoided)


আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর প্যাম মেলরয় বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মহাশূন্যে। একটি রুশ কৃত্রিম উপগ্রহ আমেরিকার কৃত্রিম উপগ্রহের কাছে এসে পড়ে।  দুই কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে ১০ মিটারেরও কম দূরত্ব ছিল। ওই অবস্থায় দু’টির মধ্যে একটিকেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল না। একেবারে মুখোমুখি চলে আসে দুই কৃত্রিম উপগ্রহ। (ROSCOSMOS-NASA)


NASA-র থার্মোস্ফিয়ার লোনোস্ফিয়ার মেসোস্ফিয়ার এনার্জেটিক্স অ্যান্ড ডায়নামিক্স (TIMED) অভিযানে শামিল কৃত্রিম উপগ্রহ এবং রাশিয়ার Cosmos 2221 কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের উপক্রম হয় মহাকাশে। TIMED-এর একেবারে কাছে চলে আসে Cosmos 2221. সেই নিয়ে প্রহরও গুনতে শুরু করে দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে শেষ পর্যন্ত বিপদ কেটে যায়।


আরও পড়ুন: Antarctica Volcanoes: আন্টার্কটিকায় বরফের নীচে শতাধিক আগ্নেয়গিরি, কী বিপদ অপেক্ষা করছে?


মেলরয় জানিয়েছেন, দুই কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে বুলেটের গতিতে ছোট ছোট টুকরো পৃথিবীর দিকে ধাবিত হতো। ১০ হাজার মাইল প্রতি ঘণ্টার গতিতে পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারত। এই ঘটনার পর আরও সতর্কতা অবলম্বন করছে NASA. কৃত্রিম উপগ্রহগুলির কক্ষপথ যাতে বাধামুক্ত থাকে, কোথায় ধ্বংসাবশেষ বা অন্য কোনও কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে, তার উপর নজরদারি চালানো যায় যাতে, তার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।


এই মুহূর্তে ১০ হাজারেরও বেশি সংখ্যক কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে। যত দিন যাচ্ছে, লাফিয়ে বাড়ছে এই সংখ্যা। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার একটি রকেটের সফল উৎক্ষেপণ করেছে রাশিয়া। Angara A5 নামের রকেটটি অত্যধিক শক্তিশালী একটি মহাকাশযান, যা পৃথিবীর কক্ষপথে ভারী সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার জন্য় তৈরি।


NASA-র TMED অভিযানটি পুথিবীর জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষণার জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ মহাশূন্য থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তর নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে সেটি। সৌরঝড়, অতিবেগুনি রশ্মির কী প্রভাব পড়ছে তার উপর, মন্যুষ্যজাত কারণে মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ারের কতটা ক্ষতি হচ্ছে, তাও খতিয়ে দেখছে। 


অন্য দিকে, Cosmos 2221 একটি রাশিয়ান ইলেকট্রনিক অ্যান্ড সিগনালস ইনটেলিজেন্স (ELINT) কৃত্রিম উপগ্রহ। ১৯৯২ সালে সেটির উৎক্ষেপণ হয়। সেটির ওজন প্রায় ২০০০ কেজি। তাই সংঘর্ষ বাধলে মারাত্মক বিপদ নেমে আসত।