কলকাতা: মঙ্গলগ্রহে নাসার যান ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্য কোনও গ্রহে সেটা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে বৃহস্পতি গ্রহের চারপাশে চক্কর দিচ্ছে নাসার যান জুনো। শুধু প্রদক্ষিণই করছে না, বহু তথ্য প্রতিটি প্রদক্ষিণ থেকে তুলে দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের ঝুলিতে। যা থেকে বৃহস্পতিকে খুব কাছ থেকে অনেক ভাল করে চিনতে পারছেন বিজ্ঞানীরা। সেই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতির উত্তর মেরুর কাছে দেখা গেল এক 'বিস্ময়' আলোর ঝলক। 


এবার এমন চমকে দেওয়ার মত ছবি ও তথ্য সামনে আনল। যদিও ছবিটি ২০২০ সালে তুলেছিল জুনো। বৃহস্পতি গ্রহকে ৩১ বার প্রদক্ষিণ শেষে এই ছবি সে পাঠিয়েছিল নাসার কাছে। সেই ছবি ২০২২ সালে খতিয়ে দেখেন বিজ্ঞানী কেভিন গিল। তারপরই যাবতীয় তথ্য সামনে এসেছে।


কী রয়েছে সেই ছবিতে?


ছবিতে দেখা গেছে পৃথিবীর মতই বৃহস্পতিতেও বজ্র বিদ্যুতের ঝলক। অতি উজ্জ্বল সেই আলোর ঝলকানি ৩২ হাজার কিলোমিটার দূর দিয়ে প্রদক্ষিণ করা জুনোর ক্যামেরায় স্পষ্ট ধরা পড়েছিল। প্রসঙ্গত পৃথিবীতে জল জমে বরফ হয়ে তার সংঘর্ষে বিদ্যুৎ ঝলকে ওঠে। বৃহস্পতিতে কিন্তু জল নয়, অ্যামোনিয়া জলের মিশ্রণ থেকে এই জমাট মেঘ ও তার সংঘর্ষে বিদ্যুতের ঝলক দেখা যায়। যার তীব্রতা নজরকাড়া। 


পৃথিবীতে যেমন বিষুবরেখার কাছে বেশি বিদ্যুতের ঝলক দেখা যায়, বৃহস্পতিতে ঠিক উল্টো। সেখানে আবার মেরু অঞ্চলের কাছে বেশি বিদ্যুতের ঝলকানি দেখতে পাওয়া যায়। চেক একাডেমি অফ সায়েন্সেসের গ্রহ বিজ্ঞানী ইভানা কোলমাসোভা বলেছেন, "বজ্রপাত হল একটি বৈদ্যুতিক নিঃসরণ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, একটি বিশাল বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। কী কারণে বৃহস্পতিতে এই আলো দেখা গিয়েছে তা পরিষ্কার নয় আমার কাছে"। 


আরও পড়ুন, মঙ্গলের বিরল ছবি, লালগ্রহের অন্যরূপে প্রাণের অস্তিত্ব 'খুঁজে' পেলেন বিজ্ঞানীরা


সম্প্রতি মঙ্গলেরও এক অন্যরূপের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মঙ্গলকে লাল গ্রহ হিসেবেই দেখে থাকি। কিন্তু এবার যেন অন্য-মঙ্গল। ২০ বছর ধরে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে এটি। সেখান থেকে Mars Express’s High-Resolution Stereo Camera দিয়ে এই ছবিটি তুলেছে সে। মঙ্গলের মাটি থেকে প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দূরত্বে থেকে তোলা হয়েছে ছবিটি। 


এই ছবিটি প্রায় ৯০টি ছবিকে একসঙ্গে করে তৈরি করা হয়েছে। ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে থেকে একাধিক ছবি তোলা হয়েছে। সেগুলিকে একত্র করেই এই ছবিটি বানানো হয়েছে। প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার এলাকাকে পরপর জুড়ে গোটা ছবিকে তৈরি করা হয়েছে। পড়শি গ্রহের এমন রূপ দেখে অবাক পৃথিবীও।