নয়াদিল্লি: মহাশূন্যে পৃথিবীর বিকল্প খোঁজার ক্ষেত্রে জল অন্যতম ভরসা। সৌরজগতের বাইরে একাধিক গ্রহে মহাসাগর রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবার দুই গ্রহাণুর বুকে জলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল। গ্রহাণুই পৃথিবীতে জল বয়ে আনে বলে যদিও আগেই ইঙ্গিত মিলেছিল গবেষণায়। (Water on Asteroids)
Iris এবং Massalia, এই দুই গ্রহাণুর বুকে জলের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। SOFIA Infrared Telescope প্রদত্ত তথ্য নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ওই দুই গ্রহাণুতে জলের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। The Planetary Science Journal-এ নিজেদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেছেন তাঁরা। (Water on Asteroid Surface)
মহাশূন্যে অনুসন্ধানের কাজ থেকে অবসর নিয়েছে SOFIA. কিন্তু তার সংগ্রহ করা তথ্য নিয়ে আজও গবেষণা চলছে। NASA এবং জার্মানির মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা সেই নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই ওই দুই গ্রহাণুর বুকে জলের অণুর খোঁজ পেয়েছেন। ওই দুই গ্রহাণুই সিলিকেটে সমৃদ্ধ।
আরও পড়ুন: Martian Solar Eclipse: লালগ্রহে সূর্যগ্রহণ ঠিক যেমন, বিশেষ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করল NASA
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডঃ আনিসিয়া এরিদোন্দো। তিনি জানিয়েছেন, অবলোহিত আলোর মাধ্যমে ওই দুই গ্রহাণুর বুকে জলের অণু চিহ্নিত করা গিয়েছে। চাঁদের বুকে যে পরিমাণ জল ছিল বলে ইঙ্গিত মেলে, তার সঙ্গে ওই দুই গ্রহাণুর মিল রয়েছে। বর্তমানে গ্রহাণুর বুকে থাকা খনিজের মধ্যে বন্দি হয়ে রয়েছে জলের অণু। কারণ সিলিকেট ওই জল শুষে নিয়েছে।
Parthenope এবং Melpomene নামের আরও দুই গ্রহাণুতেও জল রয়েছে কিনা, সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু অবলোহিত আলো থেকে তেমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি গবেষণা চালাতে গিয়ে একাধিক প্রযুক্তিগত বাধা-বিঘ্নেরও মুখে পড়তে হয়। তাই সেখানে জলের অণুর সন্ধান মেলেনি। এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, উপর থেকে কোনও গ্রহাণুকে শুষ্ক বলে মনে হলেও, তার অন্দরে জলে অণু লুকিয়ে থাকতেই পারে, যা শনাক্ত করতে উন্নতমানের সেন্সরের প্রয়োজন।
সৌরজগতের যে সমস্ত জায়গায় এখনও পর্যন্ত জলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সর্বত্রই গ্রহাণু জল বয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সপক্ষে দ্ব্যর্থহীন প্রমাণ মেলেনি। আগামী দিনে শক্তিশালী জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। কারণ শক্তিশালী লেন্সের মাধ্যমে মহাশূন্যের খুঁটিনাটি একেবারে স্পষ্ট রূপে তুলে ধরতে পারদর্শী জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।