নয়াদিল্লি: সূর্যের গা ঘেঁষে বেরিয়ে গেল 'আতঙ্ক'। শিরদাঁড়া বেয়ে চোরাস্রোত নামার আতঙ্ক নয়, এর নাম Phobos, যা আসলে মঙ্গলগ্রহের উপগ্রহ। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Phobos-এর অর্থ আতঙ্ক বা ভয়। গত সপ্তাহে সূর্যের সামনে দিয়ে গটগট করেই কার্যত বেরিয়ে যায় Phobos. আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র কৃত্রিম উপগ্রহ সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছে। (Martian Solar Eclipse)


মঙ্গলগ্রহের উপগ্রহ Phobos চাঁদের মতো বৃত্তাকার নয়, বরং দেখতে খানিকটা এবড়োখেবড়ো ডেলার মতো। সূর্যকে অতিক্রম করার সময় তাকে ক্যামেরাবন্দি করা গিয়েছে। সূর্যের সামনেই অবস্থান করছিল Phobos. সেই সময়ই মঙ্গলের জেজেরো গহ্বর থেকে ওই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে NASA-র Perseverance Rover. (Solar Eclipse on Mars)


NASA জানিয়েছে, পৃথিবীর মতো মঙ্গলের বুকেও সেই সময় সূর্যগ্রহণ চলছিল। মঙ্গলগ্রহ এবং সূর্যের মাঝে অবস্থান করছিল Phobos. Jet Propylsion Laboratory (JPL) সেই মুহূর্তের মোট ৬৮টি ছবি আপলোড করে। রোভারের Mastcam-Z ক্যামেরার মাধ্যমে ছবিগুলি তোলা হয়। Perseverance Roverটি এই মুহূর্তে মঙ্গলের বুকে অবস্থান করছে। সেখানে অনুসন্ধান চালাচ্ছে সে। 



আরও পড়ুন: Iceland Volcano: রক্তবর্ণ লাভার স্রোত আইসল্যান্ডে, নেপথ্যে প্রকৃতির খেয়াল


১৮৭৭ সালে আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানী এসফ হল প্রথম মঙ্গলগ্রহের উপগ্রহ Phobos-কে আবিষ্কার করেন। আয়তনে Phobos গ্রহাণুর মতো। মঙ্গলের মাটি থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার উঁচুতে তার অবস্থান। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যত দিন যাচ্ছে মঙ্গলের মাটি থেকে Phobos-এর দূরত্ব ক্রমশ কমছে। আগামী দিনে Phobos লালগ্রহের বুকে আছড়ে পড়তে পারে বলে অনুমান তাঁদের।


শুধুমাত্র Phobos-ই নয়, মঙ্গলগ্রহের অপর উপগ্রহ, Deimos-এর ইতিহাসও যথেষ্ট রোমাঞ্চকর। কোনও গ্রহাণু বলয় থেকে পারস্পরিক সংঘর্ষের জেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে অথবা প্রাচীন কোনও সৌরজগতের ধ্বংসাবশেষ হিসেবে ওই দুই উপগ্রহ মহাশূন্যে বিরাজ করছে বলে অনুমান তাঁদের। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কোনও সমাধানে আজও পৌঁছনো যায়নি। এখনও পর্যন্ত কোনও মহাকাশযানও Phobos-এ পৌঁছতে পারেনি। কবে তার গা ঘেঁষে উড়ে গিয়েছে অনেক মহাকাশযানই। জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা Japan Aerospace Exploration Agency (JAXA) যদিও বৃহত্তর লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। ২০২৬ সালে Martian Moons Exploration (MMX) মহাকাশযানকে Phobos-এ পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে তাদের। Phobos থেকে ধুলোর নমুনা সংগ্রহ করে আনাই কাজ MMX-এর, যা দেখে মঙ্গলগ্রহের উপগ্রহের সৃষ্টিরহস্য ভেদ করবেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল থেকেও নমুনা সংগ্রহ করবে MMX.