নয়াদিল্লি: ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশু শুক্ল (Shubhanshu Shukla)। আর আজ, ২৮ ঘণ্টা পর বিকেল চারটে বেজে ২ মিনিটে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সফল ডকিং করলেন শুভাংশু শুক্লরা। ভারতীয় এই নভোশ্চরের সঙ্গে রয়েছেন, আরও ৩ জন। দু ঘণ্টা ডকিং প্রসিডিওরের পরে, মহাকাশ স্টেশনে পা রাখলেন শুভাংশু শুক্লা। রাকেশ শর্মার আরও ৪১ বছর পরে, আপাতত ১৪ দিন এখানেই থেকে সাতটি বিষয়ে রিসার্চ করবেন শুভাংশু শুক্ল।

দীর্ঘ ২৮ ঘণ্টার সফর শেষ! ISS-S সফল ডকিং ড্রাগন ক্রাফটের। মহাকাশে নতুন মাইল ফলক পুঁতে দিল ভারত। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে ২। মহাকাশে লেখা হল নতুন মহাকাব্য। তৈরি হল নতুন ইতিহাস। শুভাংশু শুক্লা-সহ চার নভশ্চরকে নিয়ে সফলভাবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে নামল মহাকাশযান। ডকিংয়ের প্রক্রিয়া শেষ হলে সন্ধে ৬টা নাগাদ স্পেসস্টেশনে থাকা ৭ মহাকাশচারী স্বাগত জানান শুভাংশুদের। মহাকাশ থেকে শুভাংশু বার্তা পাঠিয়েছেন, 'আমি সবসময় মহাকাশে আসার জন্য অপেক্ষা করতাম। আপনারা আমাকে যেভাবে স্বাগত জানিয়েছেন, আক্ষরিক অর্থে দরজা খুলে দিয়েছেন, তাতে আমি অভিভূত।'

বুধবার ভারতীয় সময় বেলা ১২টা ১ মিনিটে ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মহাকাশে ওড়েন শুভাংশুরা। 39A লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে ৪ মহাকাশচাীকে নিয়ে উড়ে যায় ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস-এক্সের ড্রাগন ক্রাফট। মহাকাশ থেকে শুভাংশু বার্তা পাঠিয়েছেন, 'বুধবার আমরা 39A লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে লঞ্চ করেছি, যেখান থেকে প্রথম মুন ল্যান্ডিং মিশন Apollo 11 লঞ্চ হয়েছিল। এই সময় মহাকাশে খুব উৎসাহ, গর্ব অনুভব করছি। একটা ছোট অভিযান কিন্তু খুব দৃঢ় পদক্ষেপ, 'গগনযান মিশন'-এর দিকে। আসুন, আগামী ১৪ দিনকে উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলি এবং একসঙ্গে মহাকাশে থাকি।' আগামী ১৪ দিন অন্তত ৬০ টি বিষয়ে গবেষণা করবেন শুভাংশুরা। শুভাংশুর সঙ্গে মহাকাশে গিয়েছেন, পেগি হুইটসন (Peggy Whitson), স্লায়োজ় উজ়নাইনস্কি ভিসনেউফ্স্কি (Sławosz Uznański-Wiśniewski), ও টিবল কাপু (Tibor Kapu)। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছনো মাত্র স্পেসস্টেশনে থাকা ৭ মহাকাশচারী স্বাগত জানান শুভাংশুদের। জড়িয়ে ধরেন। 

শুভাংশুরা মহাকাশে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন সফট টয়। ষাটের দশকে ইউরি গ্যাগারিনের সময় থেকে এ ধরনের সফট টয় নিয়ে যাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। স্পেস ক্রাফট মহাশূন্য়ে পৌঁছলে মহাকাশচারীদের ভাসমান অবস্থা বোঝাতে জিরো গ্রাভিটি ইন্ডিকেটর হিসেবে কাজ করে এই ছোট্ট সফট টয়। অ্যাক্সিয়ম ফোর মিশনে শুভাংশুদের সঙ্গে রয়েছে হাঁস। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয়’। রাজহাঁস দেবী সরস্বতীর বাহন, শুদ্ধতা এবং জ্ঞানের প্রতীক। মহাকাশ স্টেশনে শুভাংশুদের পৌছনোর মুহূর্তের লাইভ স্ট্রিমিং হয় কলকাতার Birla Industrial & Technological Museum বা BITM-এ। হাজির ছিল বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা।

মহাকাশে কাজ শেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্রে অবতরণের কথা ড্রাগন স্পেস ক্রাফটের।