ক্যালিফোর্নিয়া: কখনও, কোনও অদূর বা সুদূর অতীতে শুক্রও (Venus) কি বসবাসের (Habitable) যোগ্য ছিল? উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন 'ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইড'-র (University Of California) গবেষকরা। তাঁদের সেই গবেষণাপত্র 'দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল' -এ প্রকাশিত হতেই নতুন শোরগোল বিজ্ঞানীমহলে। তবে কি 'পৃথিবীর যমজ' গ্রহের অতীত সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু জানা যাবে? কারণ এমন হলে আমাদের গ্রহ নিয়েও বহু কিছু জানা-বোঝা সম্ভব। পূর্বাভাস দেওয়া যাবে জলবায়ু বদলের মতো বিষয় নিয়েও।
কী করেছেন গবেষকরা?
গবেষণা মোটেও সহজ ছিল না। উত্তর খুঁজতেও তাই ঘুরপথ ধরেছিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রথম ধাপেই ৩০০টিরও বেশি এক্সোপ্ল্যানেটের খোঁজ করেন তাঁরা। এক্সোপ্ল্যানেট কী? সোজা করে বললে, এক্সোপ্ল্যানেট আসলে এমন গ্রহ যা সোলার সিস্টেম বা কোনও সৌরপরিবারের বাইরের এক নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে। এমনই ৩০০টিরও বেশি এক্সোপ্ল্যানেট চিহ্নিত করে তাদের খুঁটিনাটি তালিকাভুক্ত করেন গবেষকরা। এর পরের ধাপে পাঁচটি এক্সোপ্ল্যানেটকে বেছে নেওয়া হয়। অবশ্যই নিজের ইচ্ছামতো নয়। শুক্রগ্রহের সঙ্গে ব্যাসার্ধ, ভর, কক্ষপথের আকৃতিতে মিল রয়েছে ইত্যাদি পরিমাপের ভিত্তিতে ৫টি এক্সোপ্ল্যানেট বেছে নেওয়া হয়। এর পর যে নক্ষত্রগুলিকে তারা প্রদক্ষিণ করে, তাদের থেকে দূরত্বের ভিত্তিতে এক্সোপ্ল্যানেটগুলির ranking করা হয়। এবার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলির পরিবেশ সম্পর্কে আরও নির্দিষ্ট সঙ্কেত জোগাড়ের অপেক্ষা। সেখান থেকেই হয়তো আন্দাজ করা সম্ভব হবে যে শুক্রের পরিস্থিতি অতীতে কখনও বসবাসের যোগ্য ছিল না। 'পৃথিবীর যমজ গ্রহ' হিসেবে এই তথ্য কাজে লাগাতে পারবেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রের পরিস্থিতি...
সালফিউরিক অ্য়াসিডের মেঘে ঢাকা শুক্রে জলের হদিস পাননি বিজ্ঞানীরা। এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৪৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রায় সীসা গলে যায়। তবে এই শুক্রের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মিল রয়েছে এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলি থেকে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ যে তথ্য জোগাড় হবে তা থেকে বিজ্ঞানীরা এটি বোঝার চেষ্টা করতে পারবেন যে অতীতে কখনও এই গ্রহের পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল কিনা। কোলবি অসটবার্গ নামে ওই গবেষকদলের প্রধান বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই মনে করেন অতীতে শুক্রও বসবাসের যোগ্য ছিল। সেই ধারণা সত্যি কিনা বুঝতেই 'ভেনাস জোন'-র তুলনামূলক ভাবে শীতল গ্রহগুলির দিকে নজর রাখেন তাঁরা। অবশ্যই শুক্রের সঙ্গে তাঁদের বিশেষ কিছু মিলের ভিত্তিতেই বেছে নেওয়া হয় এক্সোপ্ল্যানেটগুলিকে। তবে সে জন্য ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ আগামী বছরই এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলিতে নজর রাখতে পারবে। বিশেষজ্ঞদের আশা, এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলির বিভিন্ন 'বায়োসিগনেচার গ্যাস' নিয়ে তথ্য জোগাতে পারবেন এই টেলিস্কোপ। সেখান থেকেই বোঝা যাবে, শুক্রে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা।
আরও পড়ুন:নিজেকে 'অযোগ্য' বললেন, পাল্টে ফেললেন ট্যুইটার বায়ো, চমক রাহুলের