নয়াদিল্লি: নতুন বছরের শুরুতেই বড় চমক অপেক্ষা করছে। কিছু ক্ষণের জন্য গায়েব হয়ে যাবে সূর্য। চোখে পড়বে শুধুমাত্র অগ্নিবলয়। চাঁদ সূর্যের সামনে চলে আসবে ওই সময়। সূর্য ঢাকা পড়ে গেলেও, উজ্জ্বল বলয়ের মাধ্যমে উপস্থিতির জানান দেবে। এই বিশেষ মহাজাগতিক ঘটনাকে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণও বলা হয়। (Solar Eclipse News)

Continues below advertisement

২০২৬ সাল শুরু হতেই ১৭ ফেব্রুয়ারি সূর্যগ্রহণের সাক্ষী থাকবে গোটা বিশ্ব। ওই সময় পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব বেশি হবে। ফলে চাঁদের থেকে আকারে ছোট হয়ে ধরা দেবে চোখে। ফলে সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দিতে পারবে না চাঁদ। (Ring of Fire)

এক্ষেত্রে টিনের কৌটোর ঢাকনার মতো, চাকতির আকারে সূর্যের মূল অংশই ঢাকা পড়বে শুধু। চারপাশ থেকে বলয়াকার সূর্য দৃশ্যমান হবে, যা দেখতে হবে আংটির মতো। পৃথিবী থেকে যে আকারে সূর্যকে দেখি আমরা, তার ৯৬ শতাংশই ঢাকা পড়ে যাবে ওই দিন।

Continues below advertisement

ইংরেজিতে অগ্নিবলয়াকার ওই সূর্যকে ‘Ring of Fire’ বলা হয়। একেবারে চরম পর্যায়ে মাত্র ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডই ওই রূপে দেখা যাবে সূর্যকে। আন্টার্কটিকার আকাশ থেকে সূর্যের ওই অবস্থা দেখা যাবে। 

অর্থাৎ হাতেগোনা কিছু মানুষই Ring of Fire দেখতে পাবেন। আন্টার্কটিকার Concordia এবং Mirny গবেষণাকেন্দ্র থেকে সূর্যের ওই রূপ দেখতে পাবেন বিজ্ঞানীরা। রোমাঞ্চের খোঁজে দক্ষিণ মহাসাগর অভিযানে যাওয়া মানুষজনও চাক্ষুষ করতে পারবেন ওই বিশেষ মুহূর্ত। আমরা ছবি বা ভিডিও-র মাধ্যমেই দেখতে পাব।

তবে ওই সময় আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা থেকেও দেখা যাবে আংশিক সূর্যগ্রহণ। আধ খাওয়া কমলালেবুর মতো দেখতে লাগবে সূর্যকে। 

বছরভর সূর্যগ্রহণ চাক্ষুষ করলেও, প্রতিবারই মুখিয়ে থাকেন মহাকাশপ্রেমীরা। কারণ চাঁদের চেয়ে আকারে ৪০০ গুণ বড় সূর্যকে চাঁদের দ্বারা আড়াল হতে দেখা যায় পৃথিবী থেকে। ২০২৬ সালের ১২ অগাস্টও পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, স্পেন থেকে। সম্পূর্ণ ২ মিনিটের জন্য সূর্য গায়েব হয়ে যাবে। কোনও অগ্নিবলয়ও দেখা যাবে না ওই সময়।

সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যিখানে চাঁদ চলে এলে, তখনই সূর্যগ্রহণ হয়। চাঁদ সূর্যকে ঢেকে দেয়, কখনও সম্পূর্ণ ভাবে, কখনও আবার আংশিক ভাবে। ফলে পৃথিবীর বহু জায়গায় চাঁদের ছায়া পড়ে। সূর্যগ্রহণ চার ধরনের হয়, পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ, বার্ষিক সূর্যগ্রহণ, আংশিক সূর্যগ্রহণ এবং মিশ্র সূর্যগ্রহণ। 

  • চাঁদ যখন পুরোপুরি ঢেকে দেয় সূর্যকে, তা হয় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। চাঁদের ছায়া যেখানে যেখানে পড়ে, সেখানে অন্ধকার নেমে আসে। চাঁদের পিছনে সূর্যের পাতলা আলোকবলয়ই শুধু চোখে পড়ে, যা এমনি দিনে স্পষ্ট বোঝা যায় না। 
  • আবার চাঁদ যখন সূর্যের সামনে দিয়ে যায় এবং পৃথিবী থেকে তার অবস্থান হয় সবচেয়ে কাছে বা দূরে, সেই সময় চাঁদ সূর্যকে চাঁদ এমন ভাবে ঢেকে রাখে, যাতেচাকতিটিকে সামান্য ছোট দেখায় সূর্যের চাকতির তুলনায়। এর ফলে শুধুমাত্র সূর্যের পরিধি দেখা যায়, যাকে দেখতে লাগে আগুনের বলয় বা আংটির মতো। একে বলা হয় বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ।
  • সূর্যের কিছুটা অংশ যখন ঢেকে দেয় চাঁদ, সূর্যকে অর্ধচন্দ্রাকার দেখায়। একে বলা হয় আংশিক সূর্যগ্রহণ, যা সাধারণত ঘটে থাকে। 
  • মিশ্র সূর্যগ্রহণ হল সবচেয়ে বিরলতম সূর্যগ্রহণ। পৃথিবীর উপর দিয়ে চাঁদের ছায়া যখন সরে সরে যায়, সেই সময় পৃথিবীর কিছু অংশ থেকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। কোথাও কোথাও আবার আংশিক গ্রহণ চোখে পড়ে। হয়ত পূর্ণগ্রাস দিয়ে শুরু হল, কিন্তু গ্রহণ শেষ হল বলয়গ্রাস বা আংশিক দিয়ে।