নয়াদিল্লি: ইতিহাসের পাতায় নাম রয়েছে আগে থেকেই। ঘোর সঙ্কটের মাঝে দাঁড়িয়েও ইতিহাস গড়ার পথে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোর। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির আগে তাঁদের পৃথিবীতে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. তাই একটানা মহাকাশে থাকার রেকর্ড গড়তে পারেন সুনীতা এবং ব্যারি। (Sunita Williams)
Boeing Starliner মহাকাশযানে চেপে মাত্র আট দিনের অভিযানে রওনা দিয়েছিলেন সুনীতা এবং ব্যারি। কিন্তু দু'মাসের বেশি সময় ধরে মহাকাশে আটকে রয়েছেন তাঁরা। মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায়, তাঁদের পৃথিবীতে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আপাতত আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। অন্য একটি মহাকাশযান পাঠিয়ে তাঁদের ফেরত আনার কথা জানিয়েছে NASA, কিন্তু গত বছরের আগে তা সম্ভব নয়। (NASA News)
সেই আবহেই সুনীতা এবং ব্যারি নয়া রেকর্ড গড়ার সামনে দাঁড়িয়ে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যদি পৃথিবীতে ফেরেন সুনীতা এবং ব্যারি, সেক্ষেত্রে একটানা মহাকাশে ২৪০ দিন কাটানোর রেকর্ড গড়বেন তাঁরা। ফেরা আরও পিছিয়ে যদি মার্চ হয়, সেক্ষেত্রে মহাকাশে একটানা ২৭০ দিন কাটাবেন দুই নভোশ্চর।
এখনও পর্যন্ত একটানা মহাকাশে সর্বোচ্চ সময় থাকার রেকর্ড আমেরিকার নভোশ্চর ফ্র্যাঙ্ক রুবিওর দখলে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৩৭১ দিন মহাকাশে ছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের মার্চেই ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু রাশিয়ার Soyuz মহাকাশযানে উল্কা বা মহাকাশ আবর্জনার টুকরে আটকে যাওয়ায় ফেরা পিছিয়ে যায় তাঁর। এর ফলে, রুবিও, রুশ নভোশ্চর সেরগেই প্রকোপিয়েভ এবং দিমিত্রি পেতেলিন বাড়তি ছয় মাস মহাকাশে কাটান।
প্রকোপিয়েভ এবং দিমিত্রি যদিও একটানা ৩৭১ দিন ছিলেন রুবির সঙ্গে, কিন্তু তাঁদের আগে আর এক রুশ নভোশ্চর ভ্যালেরি পলিয়াকভ ৪৩৭ দিন মহাকাশে ছিলেন, ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৯৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেননি কেউ। দীর্ঘসময় মহাকাশে থাকলে শরীরে কী প্রভাব পড়তে পারে, তা দেখতেই একটানা অতদিন মহাকাশে ছিলেন ভ্যালেরি।
পাশাপাশি, ২০১৯ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩২৮ দিন মহাকাশে ছিলেন ক্রিস্টিনা কচ। মহিলা হিসেবে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানের রেকর্ড তাঁর দখলে। ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালের মার্চ, ৩৪০ দিন মহাকাশে ছিলেন স্কট কেলি। মহাকাশে দীর্ঘদিন থাকলে, শরীরে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। সুনীতাদের নিয়েও সেই আশঙ্কা রয়েছে। ঠিক কত দিন সুনীতাদের মহাকাশে থাকতে হতে পারে, তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ।