নয়াদিল্লি: মাত্র আটদিনের অভিযানে গিয়ে টানা আটমাস ধরে আটকে মহাকাশে। পৃথিবীতে নিরাপদে তাঁর ফেরা নিয়ে যখন উদ্বিগ্ন সকলে, সেই আবহেই একের পর এক রেকর্ড গড়ে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস। মহাকাশে ভেসে থাকতে থাকতে হাঁটতে ভুলে গিয়েছেন তিনি। সেই অবস্থাতেও ৫.৫ ঘণ্টা স্পেসওয়াকের নয়া রেকর্ড গড়লেন সুনীতা। (Sunita Williams)
বৃহস্পতিবার মহাকাশে অভিযানের জগতে নয়া ইতিহাস রচনা করেছেন সুনীতা। নবমবারের জন্য সেদিন ফের স্পেসওয়াকে বের হন সুনীতা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের বাইরে সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোরের সঙ্গে স্পেসওয়াক করেন সুনীতা। আর তাতেই নয়া ইতিহাস রচনা করেছেন সুনীতা। এর আগে পেগি হুইটসনের দখলে সবমিলিয়ে মহাকাশে ৬০ ঘণ্টা স্পেসওয়াকের রেকর্ড ছিল। তাঁকে টপকে ৬২ ঘণ্টা ৬ মিনিট স্পেসওয়াকের রেকর্ড গড়লেন সুনীতা। (Sunita Williams Spacewalk)
তবে এবারের স্পেসওয়াক মোটেই সহজ কাজ ছিল না। কারণ প্রায় আট মাস ধরে মাধ্যাকর্ষণ শক্তিহীন মহাকাশে ভেসে থাকার ফলে হাঁটাই ভুলে গিয়েছেন সুনীতা। স্পেসওয়াকে যাওয়ার আগে আগে ফের হাঁটা শিখতে হয় তাঁকে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রিকোয়েন্সি অ্যান্টেনা টেনে বের করে আনতে হয় সুনীতা এবং ব্যারিকে। ডেস্টিনি ল্যাব এবং কোয়েস্ট এয়ারলক থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু অ্যান্টেনাটি আটকে যায়। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় সেটিকে বের করতে সক্ষম হন সুনীতা এবং ব্যারি।
ওই অ্যান্টেনা টেনে বের করে আনা গেলেও, বিপদ কাটেনি তখনও। যেভাবে অ্যান্টেনা টেনেহিঁচড়ে বের করেছেন তাঁরা, তাতে মহাকাশযানের কিছু টুকরো ভেসে আসতে পারে, তাঁরা আহত হতে পারেন বলে সতর্ক করে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. তবে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় ভালভাবেই উতরে গিয়েছেন সুনীতা এবং ব্যারি।
যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন সুনীতা এবং ব্যারি, তাঁদের প্রশংসায় ভরিয়ে গিয়েছে NASA. কারণ ওই অ্যান্টেনাটি বের করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। ওই নমুনার উপর আগামী ভবিষ্যৎ অভিযান অনেকাংশে নির্ভর করছে। বিজ্ঞানীরা দেখতে চান, মহাকাশের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অণুজীব বেঁচে থাকতে পারে কি না, প্রজননে সক্ষম হয় কি না। ভবিষ্যতে চাঁদ এবং মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা সহায়ক হবে।