নয়াদিল্লি: সব প্রস্তুতি সারা ছিল আগে থেকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বাধল বিপত্তি। তৃতীয় বারের মহাকাশযাত্রা থমকে গেল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের। প্রযুক্তিগত ত্রুটির জেরেই শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে গেল সুনীতার মহাকাশ অভিযান। মহাকাশযানে উঠেও যায় প্রথমে। মঙ্গলবার রাতে ফের অভিযান শুরু হতে পারে বলেও শোনা যায়। তবে NASA জানিয়েছে, ১০ মে আবার রকেট উৎক্ষেপণের চেষ্টা করবে তারা। (Sunita Williams Space Mission)


অত্যাধুনিক CST-200 Boeng Starliner স্পেস ক্যাপসুলে চেপে মহাকাশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল সুনীতা এবং আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র মহাকাশচারী ব্যারি উইলমোরের। ভারতীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ৮টা বেজে ৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে পৃথিবী ছেড়ে ওড়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু উড়ানের ঠিক আগে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়, তার জেরেই অভিযান স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। (Sunita Williams Space Mission)


ব্যবসায়িক দিক থেকে ইলন মাস্কের SpaceX-কে পাল্লা দিতে নয়া ওই স্পেস ক্যাপসুলটিতে চাপিয়ে সুনীতা এবং ব্যারিকে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে (ISS) পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। দু'বছর আগে Boeng Starliner  স্পেস ক্যাপসুলটির পরীক্ষামূলক উড়ান সম্পন্ন হয়। সেবার যদিও মানুষ পাঠানো হয়নি। এবার তাতে মহাকাশচারীদের চাপিয়ে ISS-এ পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অভিযান ভেস্তে গেল। 



আরও পড়ুন: Vikram and Pragyan: চাঁদের বুকে বিশ্রামরত বিক্রম ও প্রজ্ঞান, আরও কাছ থেকে মিলল দর্শন


Atlas V রকেটে চাপিয়ে ক্যাপসুলটিকে মহাকাশে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু NASA সূত্রে জানা গিয়েছে, উড়ানের ৯০ মিনিট আগে বিপত্তি বাধে। মহাকাশযানের অক্সিজেন রিলিফ ভালভ, যার মাধ্যমে বায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তাতে সমস্যা দেখা দেয় বলে জানা গিয়েছে। সুনীতা এবং ব্যারিকে নিরাপদে বের করে আনা গিয়েছে মহাকাশযান থেকে। NASA-র তরফে বিবৃতি জারি করে সমস্যার কথা জানানো হয়।


NASA সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৮ বছর বয়সি সুনীতা এবং ৬১ বছর বয়সি ব্যারি মহাকাশযানে নিজ নিজ আসনে বসেও গিয়েছিলেন। সিট বেল্ট বাঁধা হয়ে গিয়েছিল। উড়ানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল মহাকাশযানটি। বিপত্তি দেখা দেওয়ায় টেকনিশিয়ান পাঠিয়ে দু'জনকে বের করে আনা হয় মহাকাশযানের ভিতর থেকে। 


বাণিজ্যিক উড়ান হলেও, এটি তৃতীয় মহাকাশ অভিযান হতো সুনীতার। ইতিমধ্যেই মহাকাশে ৩২২ দিন কাটানোর রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সর্বাধিক স্পেসওয়াকের রেকর্ডও তাঁর দখলে ছিল দীর্ঘদিন, পরবর্তীতে পেজি হুইটসন তাঁকে ছাপিয়ে যান। নয়া স্পেস ক্যাপসুলে চেপে রওনা দিতে পারলে, আরও একবার ইতিহাস গড়তেন সুনীতা। ২০০৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রথম বার মহাকাশ অভিযানে যান সুনীতা। ২০০৭ সালের ২২ জুন পর্যন্ত ছিলেন সেবার। ২০১২ সালের ১৪ জুলাই থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় মহাকাশ অভিযানে শামিল ছিলেন। নয়া মহাকাশযানে চেপে রওনা দেওয়া নিয়ে একেবারেই ভীত ছিলেন না সুনীতা। মহাকাশযানটির নকশা তৈরিতেও যুক্ত ছিলেন তিনি। এর আগে, ভগবত গীতা নিয়ে মহাকাশে গিয়েছিলেন সুনীতা। এবার 'লাকি চার্ম' গণেশের মূর্তি সঙ্গে রাখার কথা জানিয়েছিলেন।