কলকাতা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিয়োয় জন্মালেও ভারতের সঙ্গে সুনীতা উইলিয়ামসের (Sunita Williams) নিবিড় যোগ। তাঁর বাবা দীপক পান্ডিয়ার জন্ম গুজরাতের মেহসানার ঝুলাসন গ্রামে। সুনীতার জীবনের নানা সময় তিনি প্রথম পছন্দ হিসেবে যা চেয়েছিলেন তা কখনওই করতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় বিকল্পই তাঁর জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।
বিশ্বের সীমা ছেড়ে তাঁর বিচরণ ব্রহ্মাণ্ড পর্যন্ত...বুধে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ২৮৬ দিনের বন্দিদশার পর অবশেষে পৃথিবীর বুকে পা রেখেছেন মহাকাশ-কন্যা সুনীতা উইলিয়ামস। বিশ্বজু়ড়ে উচ্ছ্বাস, উৎসব, শুভেচ্ছার বন্যা, তবে এত কিছুর মাঝেও তাঁর মন পড়ে রয়েছে পরিবারের মানুষগুলোর কাছে। স্বামী মাইকেল জে উইলিয়ামস আর পোষ্যদের নিয়ে ছোট্ট সংসার সুনীতার। দুজনের দেখা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। তখনও নভোশ্চর হননি সুনীতা। মেরিল্যান্ডের অ্যানাপোলিসের নেভাল অ্যাকাডেমিতে পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন দুজনেই। সেখানেই বন্ধুত্ব। বছর দুই পর গাঁটছড়া বাঁধেন সুনীতা ও মাইকেল। মাইকেল জে উইলিয়ামস আমেরিকার ফেডারেল মার্শাল ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। সালটা ১৯৬৫। সুনীতার জন্ম হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিয়োর ইউক্লিড শহরে। বিদেশ-বিভূঁইয়ে ভূমিষ্ঠ হলেও, ভারতের প্রতি তাঁর নাড়ির টান। ভারতীয় সংস্কৃতি মেনেই মাইকেলকে বিয়ের পর সুনীতা পাণ্ডিয়া থেকে পরিচিত হন সুনীতা উইলিয়ামস নামে। সুনীতার বাবার জন্ম গুজরাতের মেহসানার ঝুলাসন গ্রামে। মেহসানার কাছে তিনি ঘরের মেয়ে। বুধবার সুনীতারা পৃথিবীর মাটি ছুঁতেই উৎসবের আমেজ মেহসানায়।
সুনীতার জীবনের নানা সময় তিনি প্রথম পছন্দ হিসেবে যা চেয়েছিলেন তা কখনওই করতে পারেননি। কিন্তু দ্বিতীয় বিকল্পগুলিই তাঁর জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। সুনীতা পশুচিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ যোগ দিয়েছিলেন মেরিল্যান্ডের ইউএস নেভাল অ্যাকাডেমিতে। সেখানে, তাঁর আগ্রহের বিষয় ছিল ডাইভিং, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছিলেন একজন বিমানচালক। বিমান চালনায়, তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল জেট বিমান। কিন্তু তাঁকে দেওয়া হয় হেলিকপ্টার। রোটারি উইং এয়ারক্রাফ্ট টেস্ট ডিরেক্টরেটে চেজ পাইলট হিসাবে দায়িত্ব পান। শেষমেশ, জনসন স্পেস সেন্টার পরিদর্শন বদলে দেয় তাঁর জীবনের পথ।
মহাকাশচারী জন ইয়ং-এর সংস্পর্শে এসেই মহাকাশ নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু সুনীতার। মহাকাশচারী প্রশিক্ষণের জন্য নাসার কাছে আবেদন পাঠান। প্রথমবার, শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে তিনি সুযোগ পাননি। কিন্তু হাল ছাড়েননি। তনি তাঁর পাইলট স্কুলে ফিরে আসেন, এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালে দ্বিতীয়বার NASA-তে আবেদন করেন। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে ১৮ তম মহাকাশচারী দলের অংশ হিসাবে NASA-য় যোগ দেন। তার পরের ইতিহাস সবার জানা।