নয়াদিল্লি: মাত্র আটদিনের সফরে গিয়ে মহাকাশে ন’মাস আটকে ছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস ও ব্যারি বুচ উইলমোর। মহাকাশে আটকে পড়া নিজেদের মহাকাশচারীদের মাত্র ন’দিনে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনল চিন। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে তাঁদের অবতরণের ভিডিও সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। জলভাগে নয়, সটান পৃথিবীর মাটিতে পা রাখেন চিনের মহাকাশচারীরা। (Chinese Stranded Astronauts Return)
চিনের তিন বিজ্ঞানী সম্প্রতি মহাকাশে আটকে পড়েন, Chen Dong, Dhen Zhongrui এবং Wang Jie. ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু মহাকাশ আবর্জনার সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁদের মহাকাশযান Shenzhou 20-র। মহাকাশযানটির জানলায় ফাটল ধরে তাতে। ফলে চিনের নিজস্ব স্পেস স্টেশন Tiangong-এ আটকে পড়েন তাঁরা। (Science News)
ওই তিন মহাকাশচারীকেও দীর্ঘ সময় পৃথিবীর বাইরে থাকতে হবে কি না, সেই নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। সেই সময় চিনের তরফে স্পষ্ট ভাবে কিছুই জানানো হয়নি। তবে শীঘ্রই সকলকে উদ্ধার করে আনা হবে, পরবর্তী অভিযানের সময়সীমা এগিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত Shenzhou 21 মহাকাশযান পাঠিয়ে তিনজনকেই ফিরিয়ে আনল চিন। ইনার মঙ্গোলিয়ার দংফেং-এ অবতরণ করেন সকলে।
চিনা সংবাদমাধ্যম Xinhua যে ছবি প্রকাশ করেছে, তাতে লালপতাকা হাতে একজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। আর সেই পতাকাকে সাক্ষী রেখেই একে একে মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে আসেন তিন মহাকাশচারী। চিন জানিয়েছে, মহাকাশচারীদের ফিরিয়ে আনার বিকল্প এই ব্যবস্থা প্রথম বার সফল ভাবে কার্যকর করা গেল।
নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেটের স্টেজ, দুর্ঘটনার ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষকেই মহাকাশ আবর্জনা বলা হয়, যা মহাকাশে ভেসে বেড়ায়। সেগুলির সঙ্গে ধাক্কা লেগে যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে মহাকাশে। আবার সেগুলি পৃথিবীতে আছড়ে পড়়লেও মারাত্মক কিছু ঘটতে পারে। এযাবৎ একাধিক ছোটখাটো ঘটনা ঘটলেও, এই প্রথম মহাকাশযানের সঙ্গে ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটল।
মহাকাশ আবর্জনা নিয়ে বহু বছর ধরেই সরব বিজ্ঞানীরা। সেগুলি সাফ করা নিয়েও চলছে জোর চর্চা। তবে মহাকাশ আবর্জনা বৃদ্ধির জন্য চিনকেও দোষারোপ করেন অনেকে। ২০০৭ সালে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে গিয়ে নিজেদের একটি কৃত্রিম উপগ্রহকে মহাকাশেই চুরমার করে ফেলে চিন, যা থেকে ৩৫ হাজারের বেশি মহাকাশ আবর্জনার সৃষ্টি হয়। এবারের ঘটনায় তাই চিনের সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশষ
তবে এই দুর্ঘটনার পরও মহাকাশে চিনের কাজকর্ম স্বাভাবিকই রয়েছে। শীঘ্রই তাদের স্পেস স্টেশনে পৌঁছবেন পাকিস্তানের এক মহাকাশচারী। মহাকাশে নিয়মিত রসদও পৌঁছে দেয় চিন।