ওয়াশিংটন: বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবীবাসী কি সম্পূর্ণ একা, নাকি ভিন্গ্রহেও রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব, যুগ যুগ ধরে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার চেষ্টা চলছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মহাশূন্যে প্রাণের খোঁজে চলছে একের পর এক অভিযান (Alien Craft Hearing)। এর পাশাপাশি ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও উঠে এসেছে। ভিন্গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব জেনেও, বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বরাবরই আমেরিকাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। ভিন্গ্রহীদের সঙ্গে সে দেশের বিজ্ঞানীদের যোগাযোগ রয়েছে, ভিন্গ্রহীযান এবং তার চালকও আমেরিকার কাছে রয়েছে বলে অভিযোগ। এবার মার্কিন কংগ্রেসের সামনে সেই দাবি তুলে ধরলেন আমেরিকারই এক প্রাক্তন গোয়েন্দা আধিকারিক। জানালেন, বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে মোটেই একা নন পৃথিবীবাসী। আমেরিকা শুধু প্রমাণপত্র লুকিয়ে রেখেছে (UFO Hearing)। 


সাম্প্রতিক কালে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্গ্রহীযানের দেখা মিলেছে বলে খবর সামনে এসেছে। এমনকি আমেরিকায় এমন একটি ভিন্গ্রহীযান ভেঙেও পড়ে বলে শোনা যায়। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর আমেরিকার কংগ্রেসে সেই নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। ভিন্গ্রহী প্রাণীদের নিয়ে আমেরিকার অভিযান এবং গবেষণার সঙ্গে যুক্ত একাধিক আধিকারিকদের বক্তব্য শোনা হচ্ছে সেখানে। সেই শুনানিতেই এবার দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুললেন দেশের প্রাক্তন গোয়েন্দা আধিকারিক ডেভিড গ্রাশ। 


আমেরিকার কংগ্রেস কমিটির শুনানিতে বুধবার এমন অভিযোগ করেন ডেভিড। ভিন্গ্রহীযান, আগে যা আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট বলে গন্য হতো, এখন তা আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফিনোমেনন নামে পরিচিত। ডেভিডের বক্তব্য, "বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আমরা মোটেই একা নই। কর্তব্যরত অবস্থায় আমাকে বলা হয়েছিল, কয়েক দশক আগে ভেঙে পড়া ভিন্গ্রহীযানের ধ্বংসাবশেষ, তার চালকের দেহাশ নিয়ে গবেষণা এবং সেটিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।"


আরও পড়ুন: Chandrayaan-3 Mission : পৃথিবী থেকে দূরে, আজই চাঁদের আরও একধাপ কাছে পৌঁছাচ্ছে চন্দ্রযান-৩


ডেভিড বলেন, "সেই সময় যে তথ্য হাতে পেয়েছিলাম, তা দিয়ে বিশদ রিপোর্ট তৈরি করি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং তদন্তকারীদের হাতে তা তুলেও দিয়েছিলাম। ভিন্গ্রহীযান নিয়ে এই গোপনীয়তা আমিই প্রথম ফাঁস করি। শুধু সাধারণ মানুষের থেকেই নয়, কংগ্রেসের থেকেও আমেরিকার সরকার বিষয়টি লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলে একাধিক মানুষ, যাঁরা দীর্ঘদিন এই গোপন কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি আমি।  সেখান থেকে ছবি, নথি এবং মৌখিক যা বক্তব্য পেয়েছি, তা তুলে ধরেছি বিশদে।"


সব জেনেও জনসমক্ষে কেন মুখ খোলেননি তিনি, প্রশ্ন করা হয় ডেভিডকে। উত্তরে তিনি জানান, সরকার বিষয়টি গোপন রেখেছে। সেই সংক্রান্ত সমস্ত নথিও গোপন রাখা হয়েছে। তাই জনসমক্ষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার সাহস হয়নি তাঁর। আমেরিকার কংগ্রেসের প্রতিনিধি টিম বারশেটও এ ব্যাপারে ডেভিডকে সমর্থন করেন।জানান, "সরকার স্বচ্ছতা বজায় রাখবে, এমনটাই আশা করি আমরা। কিন্তু যে সরকার দেশের মানুষকেই বিশ্বাস করে না, তাদের আমরা বিশ্বাস করি কী করে? দুই নৌ-আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেছি আমি। ভিন্গ্রহীযান দেখেছেন বলে তাঁরাও জানিয়েছেন।"


আমেরিকার বিরুদ্ধে ভিন্গ্রহীদের সম্পর্কে পাওয়া তথ্য লুকনোর অভিযোগ আজকের নয়। চলতি বছরে পেন্টাগনের তরফে পৃথক একটি দফতরও গড়ে তোলা হয়, যাতে ভিন্গ্রহীযান বা সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে, তা শনাক্ত করা যায়। একনও পর্যন্ত তেমন কোনও তথ্যই হাতে আসেনি বলে এপ্রিল মাসে দাবি করে পেন্টাগন। মে মাসে সেই নিয়ে প্রকাশ্যে বৈঠক করে মহকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাও। রহস্যজনক যে সমস্ত যান চোখে পড়েছে, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সেগুলিকে দেখা উচিত বলে দাবি তোলে তারাও। তবে সম্প্রতি যে সব রহস্যজনক যান বা বেলুনের মতো বস্তু চোখে পড়েছে আকাশে, তা চিনের তৈরি বিশেষ নজর নজরদারি-যান হতে পারে বলে সন্দেহ পেন্টাগনের।