নয়াদিল্লি: অন্ধকার ভেদ করে নীলাভ আলো ছড়াল রাতের আকাশে। স্পেন এবং পর্তুগালের আকাশে দেখা গেল এই দৃশ্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই, যাতে আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য় প্রান্তে, জ্বলন্ত অবস্থায় ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে একটি নীল রঙের অগ্নিপিণ্ডকে। আর তা থেকে বিচ্ছুরিত আলোতেই অন্ধকার কেটে গিয়ে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে চারিদিক।
ঠিক কী ঘটেছে তা যদিও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। তবে এখনও পর্যন্ত যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে ওই অগ্নিপিণ্ড আসলে উল্কাপিণ্ড বলে দাবি সামনে আসছে। ভূপতিত হওয়ার আগে, মাটির খুব কাছ দিয়ে সেটি তীব্র গতিতে ছুটে যায় এবং তার জ্বলন্ত ধুলোর চাদর থেকেই আলোর রোশনাইয়ে চারিদিক ছেয়ে যায় বলে দাবি সামনে আসছে যদিও। তবে এ নিয়ে এখনও বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে সিলমোহর পাওয়া যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পেনের আকাশের বিশেষ মুহূর্তে ভিডিও পোস্ট করেছেন কলিন রাগ নামের এক X ব্যবহারকারী, যাতে মাথার উপর দিয়ে অগ্নিপিণ্ড ছুটে যাওয়ার সময় নাচতে দেখা গিয়েছে এক মহিলাকে। কলিন লেখেন, 'স্পেন এবং পর্তুগালের আকাশে উল্কার দেখা মিলেছে। অভূতপূর্ব ঘটনা। রাতের আকাশে এমন আলোর ছটার দেখা মিলবে বলে আগেই পূর্বাভাস মিলেছিল। তবে উল্কা হল, এখনও পর্যন্ত সেটি কোথাও গিয়ে পড়ার খবর মেলেনি'।
কলিনের পোস্ট করা ওই ভিডিওটি প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ দেখেছেন। ভিডিওটি অন্যত্র ছড়িয়ে দিয়েছেন সকলে। তবে ওই অগ্নিপিণ্ড উল্কা না হয়ে কৃত্রিম উপগ্রহও হতে পারে বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ। তাঁদের দাবি, হতে পারে আবারও সৌরঝড় আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে। এর ফলে কোনও কৃত্রিম উপগ্রহ হয়ত মহাকাশ থেকে ছিটকে পড়েছে।
স্পেনের পাশাপাশি, পর্তুগালের আকাশেও জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ডটি দেখা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও-ও ছড়িয়ে পড়েছে। পর্তুগালের রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। সেই সময় হঠাৎই অন্ধকার ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে একটি নীলাভ অগ্নিপিণ্ড। তীর তীব্র ঝলকানিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে চারিদিক। তবে সেখানে উল্কা আছড়ে পড়েছে বলে কোনও ঘটনা সামনে আসেনি।
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র বক্তব্য অনুযায়ী, মহাকাশ থেকে কোনও পাথর যখন ছিটকে পৃথিবীর বায়ুণমণ্ডলে প্রবেশ করে, ঘর্ষণের ফলে এদের ধুলোর চাদর জ্বলে ওঠে, যা উল্কা নামে পরিচিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার আগাই পুড়ে ছাই হয়ে যায় উল্কা। তবে উল্কা আছড়ে পড়ার নিদর্শনও রয়েছে পৃথিবীতে। এই উল্কাখণ্ড কখনও গ্রহাণু, কখনও আবার ধূকেতু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথিবীর আকাশে ঢুকে পড়ে। মূলত বরফ, ধুলো এবং পাথর দ্বারা তৈরি উল্কা। আবার চাঁদ এবং মঙ্গল থেকেও পৃথিবীর আকাশে উল্কার আবির্ভাব ঘটতে পারে।