কলকাতা: মূলত শহর-মফস্বলেই দেখা মেলে এর। ছোট্ট দেহ, বসবাসও মানুষের কাছাকাছি। কিন্তু পৃথিবী যত আধুনিক হচ্ছে, যত বাড়ছে নগরায়ন ততই যেন হারিয়ে যাচ্ছে অতি পরিচিত চড়াই। নানা গবেষণায় কারণ হিসেবে উঠে আসছে, দূষণ, খাবারের অভাব, বাসস্থানের অভাবের মতো নানা কারণ। 


বিশ্ব চড়ুই দিবস:
প্রতিবছর ২০ মার্চ পালন করা হয় বিশ্ব চড়ুই দিবস (World Sparrow Day)। সারা বিশ্বেই চড়ুই পাখি এবং মানুষের কাছাকাছি বসবাস করা আরও নানা পাখির সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা প্রসারের জন্য় এদিনটি পালিত হয়।


ভারতের Nature Forever Society, ফ্রান্সের Eco-Sys Action Foundation এবং সারা বিশ্বের আরও একাধির সংগঠনে মিলে World Sparrow Day উদযাপন করে। ২০১০ সালে সর্বপ্রথম বিশ্ব চড়ুই দিবস পালন করা হয়েছিল। 


কেন প্রয়োজন:
জীববৈচিত্রের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রতিটি প্রাণীর প্রয়োজন রয়েছে। চড়ুই এবং এর মতো আরও একাধিক প্রাণীর সংখ্যা কমে গেলে সেই ভারসাম্যে ধাক্কা লাগবে। শস্যক্ষেত্রে বিভিন্ন কীটনাশক ব্য়বহার, নগরায়নের কারণে গাছ কেটে ফেলা, পাখি নিধন- ইত্যাদি নানা কারণেই ক্রমশ কমছে চড়ুইয়ের সংখ্য়া। এর অন্যতম উদাহরণ চিন। চিনা বিপ্লবের ঠিক পরপর শস্যের ক্ষতি কমাতে চড়ুই নিধন শুরু হয়েছিল। বিশ্বাস করা হতো চড়ুই ফসল খায় বলে পরিমাণ কমে যাচ্ছে। টানা প্রচারে লাখো চড়ুই মারা গিয়েছিল। আর প্রকৃতি শোধ নিয়েছিল নিদারুণ ভাবে। বিপুল পরিমাণ চড়ুইয়ের সংখ্য়া কমে যাওয়ায় বেড়ে গিয়েছিল কীটের সংখ্যা। উজাড় হয়ে গিয়েছিল ফসল-- প্রবল দুর্ভিক্ষের ধাক্কা সামলে উঠতে সময় লেগেছিল বেশ কয়েক বছর। 


House Sparrow-চড়ুইয়ের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মানুষের বসবাসের জায়গা এবং তার কাছাকাছিই এদের দেখা মেলে। যেখানে মানুষের বসবাস নেই, সেখানে সাধারণত চড়ুইয়ের দেখা মেলে না। চড়ুইয়ের আরও একাধিক প্রজাতি রয়েছে যা বুনো। বলা হয়ে থাকে, বিপদে পড়লে সাঁতারও দিতে পারে চড়ুই। ভারতের প্রবাদপ্রতিম পক্ষী বিশারদ সেলিম আলির আত্মজীবনীর নামও 'The Fall of a Sparrow'


ভারতের কোথাও কোথাও বিশ্বাস রয়েছে, বাড়ির কোথাও চড়ুই বাসা বাঁধলে তা শুভ। কিন্তু ইদানিং ছবিটা অন্যরকম হয়েছে। ফ্ল্যাটবাড়িতে হারিয়ে যাচ্ছে ঘুলঘুলি। হারিয়ে যাচ্ছে পড়শই চড়ুইও।


আরও পড়ুন: 'মেঘে ঢাকা পাহাড়'! নাগাল্যান্ডের অভূতপূর্ব ভিডিও শেয়ার করে ফের শোরগোল ফেললেন মন্ত্রী