শ্রীনগর: ভারতের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী হিসেবে এবারের কিক-বক্সিং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিতে চলেছে কাশ্মীরের ৮ বছর বয়সি মেয়ে তাজামুল ইসলাম। চলতি বছরের নভেম্বরে ইতালিতে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। তার জন্য এখন জোরদার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছোট্ট তাজামুল। তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে গোটা উপত্যকা।

কাশ্মীরের বান্দিপোরে বাড়ি তাজামুলের। তারা পাঁচ ভাইবোন। তাজামুল তৃতীয়। সে সেনাবাহিনীর স্কুলে পড়ে। বাবা গুলাম মহম্মদ লোন একটি বেসরকারি সংস্থার গাড়ি চালান। তাজামুলের খেলা নিয়ে তার বাবার আপত্তি না থাকলেও অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব ছিল না। সেনাবাহিনীর সাহায্যেই খেলা চালিয়ে যাচ্ছে তাজামুল। কিক-বক্সিংয়ের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, অনুশীলন, বাইরে খেলতে যাওয়ার খরচ ভারতীয় সেনাই বহন করে। ইতালিতে যাওয়ার খরচও সেনাবাহিনীই দেবে বলে জানিয়েছেন লোন।

তাজামুলের কিক-বক্সিং শুরু তার বড় দিদির উত্সাহে। সে-ই দুবছর আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে ছোট বোনকে নিয়ে যায় ফয়জল আলি দারের অ্যাকাডেমিতে। সেখানে সমবয়সি প্রায় ৩,০০০ ছেলে-মেয়ের সঙ্গে মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে তাজামুল। প্রথম থেকেই এই খেলায় পারদর্শিতা দেখাতে থাকে সে। গত বছর দিল্লির তালকোটরা ময়দানে জাতীয় কিক-বক্সিং প্রতিযোগিতায় সোনা জেতে তাজামুল। এরপরেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যাওয়ার সুযোগ এসেছে।

ছোট্ট তাজামুলকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত তার কোচ ফয়জল। তিনি বলেছেন, কাশ্মীরের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী হিসেবে কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে যাচ্ছে তাজামুল। সে দেশ ও রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে আশা করছেন তাঁরা।

তাজামুল বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায়। তাই সে আগে প্রতিপক্ষের হাত-পা ভেঙে তারপর তাদের চিকিত্সা করতে চাইছে। ছোট্ট তাজামুলই এখন অশান্ত উপত্যকায় শান্তির প্রতীক হয়ে উঠছে।