কলকাতা: মোহিন্দর অমরনাথ (Mohinder Amarnath) জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে বলেছিলেন, নির্বাচকেরা ভাঁড়। নেতৃত্ব খুইয়ে বোর্ডের সঙ্গে মতানৈক্যের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। যা নিয়ে এখনও সরগরম ভারতীয় ক্রিকেট মহল।


কিন্তু অর্ণব নন্দী (Arnab Nandi) যা করলেন, তার কাছে বাকি সব নস্যি-সম!


আসন্ন রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) জন্য শুক্রবার ২৭ জনের সম্ভাব্য বাংলা দল ঘোষণা করেছে সিএবি। আগামী ২৭ বা ২৮ ডিসেম্বর থেকে সল্ট লেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে প্রস্তুতি শিবির শুরু করে দেওয়ার কথা বাংলার সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের। সেই দলে সুযোগ পাননি অলরাউন্ডার অর্ণব নন্দী। কিন্তু সেই হতাশায় তিনি এমন এক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন যে, সকলে হতবাক হয়ে গিয়েছে।


কী করেছেন অর্ণব? শুক্রবার রাতে তিনি নিজের হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে বাংলার প্রধান নির্বাচক শুভময় দাস ও বোলিং কোচ সৌরাশিস লাহিড়ীর নাম উল্লেখ করে অকথ্য গালিগালাজ লেখেন। দলে সুযোগ না পেয়ে প্রধান নির্বাচক ও সহকারী কোচকে এরকম ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে, বাংলা তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটে কেউ কোনওদিন দেখেছেন বা শুনেছেন কি না, মনে করতে পারছেন না। অর্ণবের স্টেটাসে বঙ্গ ক্রিকেট তোলপাড়। অনেকেই অলরাউন্ডারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।


আরও পড়ুন: প্রখর বুদ্ধি, হারলে দোষারোপ করে না, অধিনায়ক রোহিতকে নিয়ে মুগ্ধ আইপিএলের সতীর্থ


দল থেকে বাদ পড়ার পর অর্ণবের অসন্তোষ প্রকাশ নতুন নয়। আগেও তিনি বিরূপ মন্তব্য করেছেন। কিন্তু তিনি যে এরকম কদর্য ভাষায় আক্রমণ করবেন, তা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ। সিএবির সচিব তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবিপি লাইভকে বললেন, 'ঘটনার কথা শুনেছি। এই পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ করা হবে, তা নিয়ে আমরা বৈঠকে বসব।' যুগ্ম-সচিব দেবব্রত দাস বলছেন, 'কড়া পদক্ষেপই করা হবে। নির্বাসিতও হতে পারে। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'


এ ব্যাপারে সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ঘনিষ্ঠমহলে তিনি জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত। একজন সিনিয়র ক্রিকেটার, যাঁর কি না ২৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ-সহ ঘরোয়া ক্রিকেটে ১১০টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তিনি কীভাবে এরকম কাজ করেন, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না অভিষেক। সংস্থার নবগঠিত সংবিধান মেনে পদক্ষেপ করা হবে বলেও কর্তাদের জানিয়েছেন তিনি।


শুভময় ও সৌরাশিস, যাঁদেরকে আক্রমণ করেছেন অর্ণব, তাঁরা এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। সিএবি তাঁদের সঙ্গেও কথা বলবে।


কয়েক বছর আগে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর অশোক ডিন্ডার 'দোকানে মাল নেই, শাটার খুলে রেখে কী হবে' মন্তব্যে শোরগোল পরে গিয়েছিল। বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, ডিন্ডার মন্তব্য কখনওই অশালীন ছিল না। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধাচারণও করেননি তিনি। অর্ণবের স্টেটাস সব মাত্রা অতিক্রম করে গিয়েছে বলেই মত সকলের।


পরে স্টেটাসটি মুছে দিয়েছেন অর্ণব। তবে কঠোর শাস্তি তিনি এড়াতে পারবেন কি না, সংশয় থাকছে।