কলকাতা:  হনুমা বিহারীর জোর প্রশংসা হচ্ছে ক্রিকেট মহলে। তিনি যেভাবে সংযম, ধৈর্য্যে পাহাড়ের মতো  অটল থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের বিপর্যয় এড়ালেন, সম্ভাব্য পরাজয় এড়িয়ে ম্যাচ ড্র রেখে মাথা উঁচু করে সোমবার মাঠ ছাড়লেন, তার প্রশংসা করে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সত্যিকারের টেস্ট ম্যাচের টেম্পারামেন্ট একেই বলে! ১৬১ টি বল খেলে ২৩ রানে নট আউট থাকেন তিনি। মাত্র ২৩টা রান, কিন্তু ভারতের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। সমান তালে পাল্লা দিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও। মাথার দিকের সেরা ব্যাটসম্যানরা প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর অজিঙ্কা রাহানের দলের কাছে ম্যাচটা জেতা নয়, ড্র রেখে মুখ বাঁচানোই মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে।

কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়র মতো কেউ কেউ মনে করেন, বিহারী প্রথম ১০৯টি বল খেলে মাত্র ৭ রান করে ‘ক্রিকেটকে হত্যা করেছেন’। তাঁর ধীরে চলো কৌশলের সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা ট্যুইট করেছেন, ১০৯টি বল খেলে মাত্র ৭ রান! নৃশংস বললেও খুব কম বলা হয়। হনুমা বিহারী ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ জয়ের সুযোগকেই শুধু মেরে ফেলেনি, ক্রিকেটকেও খুন করেছে। যত অসম্ভবই মনে  হোক,  জয়কে হিসাবের মধ্যে না রাখাটা অপরাধ। সেইসঙ্গে অবশ্য তিনি যোগ করেন, আমি জানি, ক্রিকেটের কিছুই বুঝি না।



নিজের বক্তব্যের সমর্থনে সুপ্রিয় বিহারী শুধু বাজে বলগুলিকে বাউন্ডারিতে পাঠালেই ভারত ম্যাচটা জেতার মতো জায়গায় চলে যেত বলে অভিমত জানিয়েছেন। লিখেছেন, হনুমা স্রেফ দাঁড়িয়ে থেকে খারাপ বলগুলিতে বাউন্ডারি মারলেই ভারত ঐতিহাসিক জয় পেত হয়তো। পন্থ তো কেউ যা প্রত্যাশা করেনি, সেটাই করেছে। আমি ফের বলছি, হনুমা শুধু বাজে বলগুলিকেই মারতে  পারত, কেননা ততক্ষণে ও  সেট হয়ে গিয়েছে।

যদিও ক্রিকেটপ্রেমীরা বাবুলের মতের পাল্টা কটাক্ষে তাঁকে শুধু রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে বাবুল যা-ই বলুন, স্বয়ং ভারতীয় অস্থায়ী ক্রিকেট অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে বিহারী, অশ্বিনের বুক চিতিয়ে লড়াইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।  ম্যাচ বাঁচাতে দুজনের আড়াই ঘণ্টার লড়াইয়ের প্রশংসা করে রাহানে বলেছেন, এটা টেস্ট ম্যাচ জেতারই সমান। বিদেশের মাটিতে এরকম একটা ম্যাচ খেলা সত্যিই খুব স্পেশাল। অশ্বিন, বিহারিকে যেভাবে ব্যাট করেছে, সেজন্য কৃতিত্ব দিতেই হবে। পূজারা, রোহিত, পন্থ-প্রত্যেকে  টিমের স্বার্থে খেলেছে। কিন্তু শেষে আড়াই ঘন্টা টানা ব্যাট করায় বিহারী, অশ্বিনের কথা বলতেই হবে। আমরা জানতাম, একটা পুরো সেশন খেলতে হবে। আমরা টার্গেট নিয়ে ভাবছিলাম না। পূজারা, পন্থ ভালই ব্যাট করছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, ওরা আউট হয়ে গেল। তারপর বিহারী  চোট নিয়েও খেলছিল, সেজন্য ওর একটা নির্দিষ্ট মানসিকতা নিয়ে খেলতে হত। যেভাবে আমরা খেলেছি, সেজন্য সকলের প্রশংসা  প্রাপ্য। এটা তো জয়েরই সমান।