বার্মিহ্যাম : বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের শেষ দুটি ম্যাচে ফাঁকফোকর দ্রুত মেরামত করাই লক্ষ্য ভারতীয় শিবিরে। আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে ভারত। টুর্নামেন্টের শেষ চারে পৌঁছনোর আশা জিইয়ে রাখতে বাংলাদেশকে এই ম্যাচে জিততেই হবে। অন্যদিকে, এই ম্যাচ জিতলেই সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত হবে ভারতের। আগামীকালের ম্যাচে প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারেন কেদার যাদব ও যজুবেন্দ্র চাহল। এজবাস্টনের মাঠের বেখাপ্পা আয়তনের কারণে অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমার ও রবীন্দ্র জাডেজাকে খেলানো হতে পারে।
সাত ম্যাচে এগারো পয়েন্ট ভারতের। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিতলেই শেষ চারে পৌঁছে যাবে ভারত। অন্যদিকে, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রথমবার পৌঁছনোর সম্ভাবনা বজায় রাখতে বাংলাদেশকে তাদের গ্রুপ পর্বের বাকি দুটি ম্যাচেই জিততে হবে।
গতকাল রবিবার ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছে ভারত। টুর্নামেন্টে বিরাট কোহলির দলের এটাই প্রথম হার। এরপর দলের দুর্বলতার জায়গাগুলি দ্রুত কাটিয়ে ওঠার জন্য ভারতের হাতে সময় খুবই কম। কারণ, এমন একটা দলের বিরুদ্ধে এই সংশোধনের পথে হাঁটতে হবে, যে দলে রয়েছেন বিশ্বের পয়লা নম্বর অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের মিডল অর্ডারের দুর্বলতার বিষয়টি দেখা গিয়েছে। ফিনিসার হিসেবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পারফরম্যান্স একেবারেই আহামরি নয়। টুর্নামেন্টে এই স্পিন বোলিং আক্রমণকেও নিষ্প্রভ দেখিয়েছে।
ধোনি ও কেদার যাদবের মতো ব্যাটসম্যান ক্রিজে থাকা সত্ত্বেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ পাঁচ ওভারে ভারত করেছে মাত্র ৩৯ রান। তাঁদের বড় শট খেলার অক্ষমতার থেকেও জয়ের লক্ষ্যের দিকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সদিচ্ছার অভাব সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। যদিও টিম ম্যানেজমেন্ট দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের পাশেই দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে কোপটা কেদারের ঘাড়েই পড়তে পারে। তাঁর জায়গায় রবীন্দ্র জাডেজার অন্তর্ভক্তির সম্ভাবনা জোরাল হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক যুক্তি হতে পারে যে, ছয় ও সাত নম্বরে নেমে কেদারের তুলনায় জাডেজার বড় শট খেলার ক্ষমতা। এছাড়াও তাঁর উইকেট টু উইকেট বাঁহাতি স্পিন বোলিং ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। সেইসঙ্গে দুরন্ত ফিল্ডিং দক্ষতাও ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে।
প্রথম একাদশ বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এজবাস্টনের মাঠের আয়তন একটা বড় ব্যাপার হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই মাঠের একদিকের বাউন্ডারি ৬০ মিটারের কম।
ইংল্যান্ডের ত্রিমূর্তি জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো ও বেন স্টোকস ভারতের দুই রিস্ট স্পিনার যজুবেন্দ্র চাহল ও কুলদীপ যাদবের বিরুদ্ধে ছোট বাউন্ডারির এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছিলেন। তাঁরা দুই স্পিনারের বিরুদ্ধে সফলভাবে রিভার্স সুইপ মেরেছেন।
অন্যদিকে, ইংল্যান্ডের পেসাররা যেদিকে বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য বেশি সেদিকে ফিল্ড সাজিয়ে সেই অনুযায়ী বল করছিলেন। এভাবে ভারতের বাউন্ডারি মারার ক্ষেত্রে লাগাম টানতে ইংরেজ বোলাররা সফল হন।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কৌশলগতভাবে পরাস্ত হওয়ার পর টিম ম্যানেজমেন্ট এখন সবকিছু ঠিকঠাক করে নিতে আগ্রহী। তামিম ইকবাল, মুশফিকর রহিম, লিটন দাস ও মহমদুল্লাহর মতো ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে দুই রিস্ট স্পিনারকে খেলানোটা ঝুঁকি হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
ভুবনেশ্বর ফিট হয়ে উঠেছেন। তাই আগামীকালের ম্যাচে এই প্রথম তিন প্রধান পেসার নিয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে ভারতকে। সেক্ষেত্রে চাহলকে ড্রেসিংরুমে থাকতে হতে পারে। ভুবনেশ্বর থাকলে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
আগামীকালের ম্যাচে ভারতের কাছে সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল, ইংল্যান্ডের মতো বাংলাদেশের বোলিং অ্যাটাক ততটা শক্তিশালী নয়। তারা টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত শাকিবের দুরন্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের (৪৭৬ রান ও ১০ উইকেট) ওপর নির্ভরশীল। বোলিংই বাংলাদেশের দুর্বল জায়গা এবং সেক্ষেত্রে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশের ঘাড়ে বড় রানের বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইবেন কোহলি।
বাংলাদেশের বোলিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা অধিনায়ক মাশরফি মোর্তাজার ফর্ম। তিনি ছটি ম্যাচে মাত্র একটি উইকেটে পেয়েছেন।