কলকাতা: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে ব্রাত্য হয়ে পড়ার দিন বাংলার প্রাপ্তি বলতে অভিষেক ডালমিয়ার নতুন দায়িত্ব। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য হতে চলেছেন ক্রিকেট প্রশাসনের কিংবদন্তি, প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার পুত্র অভিষেক। যিনি বিদায়ী সিএবি প্রেসিডেন্টও।
মঙ্গলবার আরব সাগরের তীরে বোর্ডের শীর্ষকর্তাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অভিষেককে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাংলা ক্রিকেট প্রশাসনে পদাধিকারী হিসাবে অভিষেকের প্রথম ইনিংস আপাতত শেষের মুখে। ২০১৫ সালে জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর পর সৌরভ যখন সিএবি সচিব থেকে প্রেসিডেন্ট পদে উন্নীত হন, তখনই ক্রিকেট প্রশাসনে প্রবেশ অভিষেকের। সচিব হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে সৌরভ বোর্ডে যাওয়ার পর সিএবি প্রেসিডেন্ট হন অভিষেক। লোঢা কমিটির সুপারিশ ও সিএবি-র সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় পদাধিকারী হিসাবে কেউ টানা ৬ বছর থাকতে পারবেন। সেই হিসাবে সিএবি-তে পদাধিকারী হিসাবে ২০২১ সালে মেয়াদ ফুরিয়েছে অভিষেকের।
কিন্তু বোর্ড যেহেতু লোঢা কমিটির বেশ কিছু সুপারিশের সংশোধন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল, তাই সিএবি-তেও থেকে গিয়েছিলেন অভিষেক। তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বোর্ড মামলার শুনানি করে নির্দেশ দিয়ে দেওয়ায় সিএবি-তে ৩১ অক্টোবর বার্ষিক সাধারণ সভার দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সেদিনই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। সরে যেতে হবে অভিষেককে। তবে তার আগেই, ১৮ অক্টোবর বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছেন তিনি।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মুম্বইয়ের বৈঠকে সৌরভকে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যে পদে ছিলেন ব্রিজেশ পটেল। কিন্তু বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদ থেকে কার্যত অপসারিত সৌরভ সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন বলেই জানা গেল ওই বৈঠকে হাজির থাকা কারও কারও সঙ্গে কথা বলে।
শোনা গেল, সৌরভ প্রবলভাবেই চেয়েছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসাবে আরও তিন বছর, ২০২৫ সাল পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ শেষ করতে। ঘনিষ্ঠমহলে জাতীয় দলের কিংবদন্তি অধিনায়ক এ-ও বলেছেন যে, পরের বছর দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। সেই টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন তিনি। তাঁর কথা ভেবেই নিয়ম বদল করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। অথচ সেই তাঁকেই সরিয়ে দেওয়া হল কার্যত জোর করে! বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদ খুইয়ে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসাবে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্য়ানের মতো পদ নিতে আগ্রহী ছিলেন না সৌরভ। তবে এরপরেও সৌরভ ঘনিষ্ঠরা দেখতে চান, আইসিসি চেয়ারম্যান পদের দৌড়ে সৌরভকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সমর্থন করে কি না।