লন্ডন: গতকাল ১৯ রানে ব্যাট করা হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলেছিলেন। সেই হ্যারি ব্রুকই ওভালে পঞ্চম টেস্টের (IND vs ENG 5th Test) দ্বিতীয় ইনিংসে শতাধিক স্ট্রাইক রেটে ১১১ রানের ইনিংস খেলেন। ইংল্যান্ডকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। এমন ক্ষেত্রে যে কারুর আত্মবিশ্বাস টলে যেতে পারে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসির হোসেন আশঙ্কা করেছিলেন এই ক্যাচ ফেলার জন্যই কুখ্যাত হয়ে থেকে যাবেন তিনি। তবে মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj) যেন অন্য ধাতু দিয়েই গড়া।

ম্যাচ তথা সিরিজ়ের শেষ দিনে তিনি শুধু বল করলেন না, কার্যত আগুন ঝরালেন। তিন তিনটে উইকেট নিলেন ভারতের তারকা ফাস্ট বোলার। তিনিই দলের হয়ে শেষ উইকেটটি নিয়ে ভারতকে ম্য়াচ জেতালেন। সিরিজ় ড্র করতে সাহায্য করলেন। মোট নয়টি উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরাও হলে। তবে ব্রুকের ক্যাচ ফেলার পর তাঁর মনোভাব কেমন ছিলেন? কোনও সময় কি মনে হয়নি তিনি বড় ভুল করে দলকে খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছেন?

ম্যাচ শেষে সিরাজ জানান, 'সত্যি বলতে আমি বুঝতে পারিনি যে ক্যাচটা নিয়ে আমার পা বাউন্ডারি লাইনের কুশনে স্পর্শ করে যাবে। নিঃসন্দেহে ওটা ম্যাচ ঘোরানো এক মুহূর্ত ছিল। তবে আমি আজ সকালে কেবল ভাল জায়গায় বল রাখার চেষ্টা করছিলাম। আর হ্যাঁ, সবসময় আমার নিজের প্রতি ওই বিশ্বাসটা ছিল যে আমিই দলকে ম্য়াচ জেতাব।'

 

সিরাজ কিন্তু ম্যাচ জেতালেনও। পরিসংখ্যান বলে যশপ্রীত বুমরার অনুপস্থিতিতে সিরাজ যেন আরও বেশি করে জ্বলে উঠেন। ওভাল টেস্টেও ঠিক তেমনটাই হল। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। তাঁর এই লড়াই ক্রিকেটপ্রমীদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

পঞ্চম দিনের সকালবেলাতে নিজের প্রথম ওভারেই ইংল্যান্ডের শেষ বিশেষজ্ঞ ব্যাটার জেমি স্মিথকে ফিরিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের মনে আশা জাগান সিরাজ। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড শুরুটা জোড়া বাউন্ডারি দিয়ে করলেও, সময় যত গড়াল, ওভার প্রতি ওভার ততই ক্ষুরধার হয়ে উঠলেন তিনি। নিরন্তর উইকেট লক্ষ্য় করে বোলিং করে গেলেন ভারতের দুই ফাস্ট বোলার। তাঁদের আগুনে বোলিংয়ে একে একে ফিরলেন ওভারটন, টাঙরা। নয় উইকেট হারাল ইংল্যান্ড।

তবে দুরন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ক্রিস ওকস ব্যাটে নামেন। সোয়েটারের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন তিনি। অপরপ্রান্তে তখন ছিলেন গাস অ্যাটকিনসন। ওকসকে যাতে বল খেলতে না হয়, তা সুনিশ্চিত করেন অ্যাটকিনসন। তবে সিরাজের বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচও দেন তিনি। অবশ্য আকাশ দীপ তালুবন্দি করতে পারেননি। রক্তচাপ আরও বাড়ে। কিন্তু শেষমেশ সিরাজ অ্যাটকিনসনের উইকেট ভাঙতেই ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।