পাল্লেকেলে: ঠিক মাসখানেক আগে বার্বাডোজ়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারতীয় দল। কার্যত হেরে যাওয়া এক ম্য়াচে অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে দলের জন্য জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন ভারতীয় বোলাররা। মঙ্গলবার, ৩০ জুলাইয়ের পাল্লেকেলেতে ফিরে এল সেই স্মৃতি। সেদিনের বার্বাডোজ়ের মতো এদিনের পাল্লেকেলেতেও শেষ পাঁচ ওভারে জয়ের জন্য প্রতিপক্ষকে ৩০ রান তুলতে হত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যা একপ্রকার জলভাতই বলা যেতে পারে। কিন্তু ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন ভারতীয় বোলাররা। ম্যাচ শেষে জয়ের হাসিও হাসল টিম ইন্ডিয়াই।


শুভমন গিলের ৩৯ রান ও লোয়ার অর্ডারে রিয়ান পরাগ এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের (Washington Sundar) যথাক্রমে ২৬ ও ২৫ রানের ইনিংসে ভর করে ভারতীয় দল শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে (IND vs SL) নির্ধারিত ২০ ওভারে নয় উইকেটের বিনিময়ে ১৩৭ রান তোলে। পাল্লেকেলের পিচে যেখানে বল পড়ে ভীষণ পরিমাণেই ঘুরছিল, সেখানে এই রান তোলা যে সহজ হবে না, তা বোঝাই যাচ্ছিল। কিন্তু লঙ্কান ওপেনাররা বিগত দুই ম্যাচের মতোই ফের একবার দলের মজবুত ভিত গড়ে দেন। ১৩৮ রান তাড়া করতে নেমে পাথুম নিসঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস ৫৮ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ গড়েন।


নিসাঙ্কা ২৬ রানে আউট হলেও দুই কুশল, মেন্ডিস ও পারেইরা ৫২ রানের পার্টনারশিপে দ্বীপরাষ্ট্রকে শতরানের গণ্ডি পার করান। ১৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর মাত্র এক উইকেটের বিনিময়ে ১০৮ রান। ক্রিজে তখন সেট হওয়া মেন্ডিস ও পারেইরা। এমন পরিস্থিতে সকলেরই মনে হচ্ছিল ম্যাচ শ্রীলঙ্কার দখলে চলে গিয়েছে। কিন্তু সেট মেন্ডিসকে ৪৩ রানে আউট করে ভারতের হয়ে ম্যাচে ফেরার হালকা আশা জাগান রবি বিষ্ণোই। ঠিক পরের ওভারেই সুন্দরের জোড়া সাফল্য। পর পর দুই বলে সাজঘরে ফেরেন হাসারাঙ্গা ও লঙ্কান অধিনায়ক চরিথ আসালঙ্কা। 


তবে তখনও ক্রিজে উপস্থিত ছিলেন পারেইরা। ১৮তম ওভারে খলিল আমেদ একের পর এক ওয়াইড বল করায় ভারতের জয়ের আশা আরও ক্ষীণ হয়ে যায়। শেষ দুই ওভারে শ্রীলঙ্কার জয়ের জন্য দরকার নয় রান। এমন সময় হঠাৎই স্পিন সহায়ক উইকেটে বল করতে আসেন রিঙ্কু সিংহ (Rinku Singh)। এর আগে রিঙ্কুকে তেমন বল করতে দেখা যায়নি। তাঁকে বল হাতে দেখে সকলেই অবাক। কুশল পারেইরাও খানিকটা বিস্মিত হয়েছিলেন বটে। ৪৬ রানের তাঁর ইনিংস সমাপ্ত করেন রিঙ্কু। ওভারে নেন দুই উইকেট।


শেষ ওভারেও বল হাতে ছিল চমক। মহম্মদ সিরাজের এক ওভার বাকি থাকলেও, বল হাতে তুলে নেন অধিনায়ক সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav) নিজে। ওই যে সিরিজ় শুরুর আগে বলেছিলেন যে তিনি অধিনায়ক নয়, নেতা হতে চান। আর নেতারা তো সবসময় সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন। সূর্যও তাই করলেন। জোড়া উইকেট নিলেন। ম্যাচ টাই হল। সুপার ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের বিরুদ্ধে বড় শট মারতে গিয়ে ফিরলেন নিসাঙ্কা, পারেইরা। মাত্র তিন রান তাড়া করতে নেমে নেতা সূর্য প্রথম বলেই চার মেরে টিম ইন্ডিয়াকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। ৩-০ সিরিজ় জিতে নেয় ভারত। সেই বার্বাডোজ়ের মতোই কার্যত হেরে যাওয়ার মুখ থেকে নাছোড় লড়াইয়ে জয় ছিনিয়ে আনে ভারতীয় দল


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: রোহিত-কোহলিকে অনুশীলনে বাধা! কী কারণে কলম্বোয় মাঠে নামতে পারলেন না বিরাটরা?