আমদাবাদ: নরেন্দ্র মোদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ বরাবরই ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য। কিন্তু শীতকালে ম্য়াচ। একানা স্টেডিয়ামে কুয়াশার জন্য় খেলাই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে পরে ফিল্ডিং করলে শিশির একটা ফ্য়াক্টর হতে পারে, এমন সম্ভাবনা ছিলই। কিন্তু তবুও ভারতই কিছুটা এগিয়ে ছিল ম্য়াচের প্রথম ২০ ওভারের পর। কারণ বোর্ডে ২৩১ রান পুঁজি। এত বড় রান তাড়া করতে নামাটা একেবারেই সহজ কাজ নয়। ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানেই থেমে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ৩০ রানে জয় ছিনিয়ে নিল ভারতীয় দল। অন্য়দিকে, পাঁচ ম্য়াচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে জিতে গেল সূর্যকুমার যাদবের দল।
২৩২ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেম ওপেনে নেমেছিলেন রেজা হেন্ড্রিক্স ও কুইন্টন ডি কক। এই সিরিজে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন ডি কক। এদিনও শুরু থেকেই চালিয়ে খেলা শুরু করলেন। বিশেষ করে অর্শদীপ সিংহের ওপর বেশি নির্দয় ছিলেন বাঁহাতি উইকেট কিপার ব্য়াটার। ডি কক ৩৫ বলে ৬৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন এদিন। ৯টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা হাঁকান। রেজা হেন্ড্রিক্স মাত্র ১৩ রান করে প্যাভিলিয়ন ফেরেন বরুণ চক্রবর্তীর বলে। হেন্ড্রিক্স ফেরার পরও রানের গতি কমেনি দক্ষিণ আফ্রিকার। ডেওয়াল্ড ব্রেভিস এসে ডি ককের সঙ্গে যোগ দেন। তিনটি বাউন্ডারি ও দুটো ছক্কার সাহায্যে ১৭ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ডি কককে বুমরা ফেরাতে ধীরে ধীরে ম্য়াচ ঘুরতে থাকে ভারতের দিকে। এর মাঝে বরুণ চক্রবর্তী এসে পরপর মারক্রাম ও ফেরেইরাকে ফিরিয়ে দেন। হ্যাটট্রিকের সুযোগ যদিও মিস করেন বরুণ। মিলারও বেশি রান করতে পারেননি। ইয়েনসেন ১৪ রান করে আউট করেন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানের বেশি বোর্ডে তুলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
উল্লেখ্য়, সিরিজে এগিয়ে থেকে এদিন মাঠে নেমেছিল ভারত। টস হারলেন সূর্যকুমার। ভারতকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান এইডেন মারক্রাম। শুভমন গিল পুুরো ফিট না হয়ে ওঠায়, তার পরিবর্তে চলতি সিরিজে প্রথমবারের জন্য সুযোগ চলে আসে সঞ্জু স্যামসনের। অভিষেকের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন স্যামসন। ৫.৪ ওভারে দুজনে মিলে বোর্ডে ৬৩ রান যোগ করার পর অভিষেকের উইকেট হারায় ভারত। ২১ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন অভিষেক এদিন। অন্যদিকে স্যামসনও ২২ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। তবে ফের একবার ব্যর্থ হলেন সূর্যকুমার যাদব। এধিন ৫ রান করেই প্যাভিলিয়ন ফিরে যান ভারত অধিনায়ক। আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ভারতীয় দল ঘোষণা হওয়ার কথা। সূর্যর এমন ব্যাটিং ফর্ম সত্যিই চিন্তার বিষয়। অবাক হওয়ার থাকবে না যে আচমকা সূর্যকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে অন্য় কাউকে যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। সূর্য ফেরার পর ক্রিজে আসেন হার্দিক পাণ্ড্য। শুরু থেকেই মারকাটারি ব্যাটিং করেন তিনি। লিন্ডের এক ওভারে ২৭ রান খরচ করেন। সেই ওভারে হার্দিকের ব্যাট থেকে আসে তিনটি ছক্কা ও দুটো বাউন্ডার। উল্টোদিকে তিলক এই ফর্ম্য়াটে যে রান মেশিন হয়ে উঠেছেন জাতীয় দলের জার্সিতে, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন। আরও একটি অর্ধশতরান এল তাঁর ব্যাট থেকে। ৪২ বলে ৭৩ রান করে ফিরলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান বোর্ডে তুলে নেয় ভারত।