কলকাতা: 'জেন্টালম্যানস গেম'-র সবথেকে জেন্টালম্যান ক্রিকেটার হিসাবে গণ্য করা হত তাঁকে। দলের প্রয়োজনে মিডল অর্ডারে ব্যাটিং থেকে কিপিং, কী না করেছেন তিনি। তাঁর নাম রাহুল দ্রাবিড়। ভারতীয় দলের বর্তমান কোচ। তাঁকে আইডল মেনে বড় হওয়া ক্রিকেটারও যে তাঁর মতোই হবেন, এতে অবাক হওয়ার তো কিছুই নেই। তাঁরই রাজ্যের কেএল রাহুলের (KL Rahul) চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একেবারে আদর্শ 'টিমম্যান'র মতোই। স্বল্পভাষী, শান্ত স্বভাবের ছেলেটা যে কী অসম্ভব লড়াকু তা এই বছরটা যেন হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে।


আইপিএলের মাঝপথে মে মাসে পেশিতে চোট পেয়েছিলেন রাহুল। ছিটকে যেতে হয়েছিল গোটা টুর্নামেন্ট থেকে। এরপর মাঠে ফেরার দীর্ঘ লড়াই। উরুর পেশিতে চোট পাওয়ায় রাহুলকে বিলেতে অস্ত্রোপ্রচারও করাতে হয়। দীর্ঘদিন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাব চালাতে হয় রাহুলকে। তিনি চোট পাওয়ার আগেই কিন্তু নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন না। ৩৪.২৫ গড়ে রাহুল ২৭৪ রান করেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন না তিনি। বিশ্বকাপের (ODI World Cup 2023) আগে তাঁর জাতীয় দলে ফেরা আদৌ সম্ভব হবে কি না, সেই নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন ছিল। 


তবে তাঁকে বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপের দলে সুযোগ দেওয়া হয়। মেগা টুর্নামেন্টের আগে রাহুলের ম্যাচ ফিটনেস বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এশিয়া কাপ শুরুর ঠিক মুখেই জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পে আবারও চোটের কবলে পড়েন ভারতের তারকা ক্রিকেটার। গোটা গ্রুপ পর্বে খেলতে পারেননি তিনি। উপরন্তু, শ্রেয়স আইয়ার, ঈশান কিষাণও ছন্দে ছিলেন। তাই তাঁর একাদশে সুযোগ পাওয়া নিয়ে ফের প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়। শ্রেয়সের চোটে রাহুল একাদশে সুযোগ পান আর এশিয়া কাপের সুপার সিক্সে নিজের প্রত্যাবর্তন ম্যাচেই শতরান হাঁকিয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে দেন তিনি।


তারপর থেকে একের পর এক ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলতি বিশ্বকাপেও ভারতীয় দল চাপে পড়লে অনবদ্য ৯৭ রানের ইনিংস তাঁর ব্যাট থেকে। ভারতীয় মিডল অর্ডার নিয়ে বিশ্বকাপের আগে যত যা উদ্বেগ ছিল, সেইসব উদ্বেগ নিজের চওড়া ব্যাটের মাধ্যমেই ঘুচিয়ে দেন রাহুল। এতো গেল ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ। কিপার রাহুলও কিন্তু চলতি বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন। মেগা টুর্নামেন্টে উইকেটের পিছনে একাধিক অনবদ্য ক্যাচ ধরেছেন। ভারতীয় দলের ম্যানেজমেন্টের তরফে পেয়েছেন সেরা ফিল্ডারের পুরস্কারও। পাশাপাশি ডিআরএস নিতে বারংবার অধিনায়ক রোহিতকে সঠিক পরামর্শও দিয়েছেন।


কিপার, ব্যাটার রাহুলের সৌজন্যেই কিন্তু বিশ্বকাপে ভারত ঋষভ পন্থের মতো ম্যাচ উইনারের অনুপস্থিতিত বুঝতে পারেনি। এত বড় চোট সারিয়ে মাঠে ফিরে এহেন পারফরম্যান্স খেলোয়াড় এবং ব্যক্তি হিসাবে রাহুলের লড়াকু এবং হার না মানা মানসিকতারই পরিচয়বাহক। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডারে ব্যাটিং, কিপিং করে কেএল রাহুল প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তিনি রাহুল দ্রাবিড়ের যোগ্য উত্তরসূরি। যোগ্য টিমম্যান।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


https://whatsapp.com/channel/0029VaCBCh6545uwkeNBg11y


আরও পড়ুন: নিজের রাজ্য দলে ব্রাত্য, অশান্ত ব্যক্তিগত জীবন, ২২ গজে হার না মানা এক যোদ্ধা শামি