সন্দীপ সরকার, কল্যাণী: একজন অপরাজিত ছিলেন ৬১ রানে। অন্য ক্রিজে ছিলেন ২৫ রান করে। অসমের বিরুদ্ধে বাংলা যে বড় স্কোর তুলবে, সেই ইঙ্গিত সোমবারই দিয়েছিলেন শাহবাজ আমেদ (Shahbaz Ahmed) ও সুমন্ত গুপ্ত।
মঙ্গলবার প্রথমজন করলেন সেঞ্চুরি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শাহবাজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১০১ রান করলেন শাহবাজ। কাঁধের চোটের জন্য যিনি উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলার প্রথম ম্যাচে খেলতে পারেননি। দ্বিতীয় ম্যাচে গুজরাতের বিরুদ্ধে দলে ফিরেই ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন। চাপের মুখে বড় ইনিংস খেলা কার্যত অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন বাঁহাতি স্পিনার অলরাউন্ডার।
দ্বিতীয়জন, সুমন্ত গুপ্তও এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। তবে মাত্র তিন রান আগে থামতে হল তাঁকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে। ঋতুরাজ বিশ্বাসের বল পিছনের পায়ে খেলতে গিয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটার। তাঁর বাঁ পা লেগস্টাম্পে লেগে বেল ফেলে দেয়। ৯৭ রান করে হিট উইকেট হন সুমন্ত। রেলওয়েজের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছিলেন সুমন্ত। পরপর দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া হল তাঁর। আউট হয়ে সুমন্তর নিজেরও যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, এভাবে সেঞ্চুরি হাতছাড়া হতে পারে।
পঞ্চম উইকেটে শাহবাজ ও সুমন্ত মিলে যোগ করলেন ১২৯ রান। তাঁদের পার্টনারশিপের জন্যই নিশ্চিত হয়ে যায় যে, বড় স্কোর তুলবে বাংলা। শেষ পর্যন্ত ৪৪২ রানে শেষ হয় বাংলার প্রথম ইনিংস। অসমের চেয়ে ২৪২ রানের লিড নেয় বাংলা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মহম্মদ শামির আগুনে স্পেলের সামনে পড়তে হয় অসমকে। শামি এক প্রান্ত থেকে নতুন বলে দুরন্ত বোলিং করেন। মাত্র ৫ ওভারে ২টি মেডেন সহ ১৫ রান খরচ করে ২ উইকেট তুলে নেন ডানহাতি ফাস্টবোলার। অন্য প্রান্ত থেকে এক উইকেট তোলেন সূরয সিন্ধু জয়সওয়ালও। ম্যাচের তৃতীয় দিন চা পানের বিরতির আগেই ৬ ওভারে ৮/৩ হয়ে গিয়েছিল অসম। অনেকে ভাবছিলেন, তৃতীয় দিনই না খেলা শেষ হয়ে যায়।
তবে প্রতিরোধ গড়ে তুললেন অসমের দুই ব্যাটার - দেনিশ দাস ও সুমিত ঘাদিগাওঙ্কর। অবিচ্ছেদ্য চতুর্থ উইকেটে ৯০ রান যোগ করেছেন দুজনে। তৃতীয় দিনের শেষে অসমের স্কোর ৯৮/৩। দেনিশ ৬৩ ও সুমিত ৩০ রানে ক্রিজে।
বাংলা এখনও ১৪৪ রানে এগিয়ে। ইনিংসে বা ১০ উইকেটে জিতলে বোনাস সহ সাত পয়েন্ট আসবে। বুধবার, ম্যাচের শেষ দিন থ্রিলারের অপেক্ষা কল্যাণীতে। দিনের খেলার শেষে শাহবাজ বললেন, 'নতুন বলে শামিভাই দারুণ বল করেছে। এখানে প্রথম সেশনে পেসাররা সাহায্য পায়। হাওয়া দেয়। বল নড়াচড়া করে। কাল প্রথম সেশনে দ্রুত ওদের অন্তত তিন উইকেট তোলাই লক্ষ্য। আপাতত সরাসরি জয়ের কথা ভাবছি। বোনাস এলে সেটা তো আরও ভাল।' যোগ করলেন, 'চোট সারিয়ে উঠে দলে ফিরেই পারফর্ম করতে পেরে ভাল লাগছে। চোট সারিয়ে ফেরার পর একটা চাপ তো থাকেই। লক্ষ্য ছিল লম্বা সময় ক্রিজে কাটাব।'