কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় দানার দাপটে মাঠ এমনই ভিজে গিয়েছিল যে, প্রায় পৌনে দুদিন খেলা হয়নি। তারপরও গুরুত্বপূর্ণ টস জিতেছিল বাংলা। প্রতিপক্ষ কেরলকে ৮৩/৬ করে দেওয়ার পর তো সরাসরি জয়ের সম্ভাবনার কথাও শোনা গিয়েছিল বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লর মুখে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত পর্বতের মূষিক প্রসব হল। সল্ট লেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে সরাসরি জয় তো দূর অস্ত, কেরলকে অল আউটও করতে পারল না বাংলা। ৩৫৬/৯ তুলে মঙ্গলবার প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছিল কেরল। শেষ ৩ উইকেটে ২৭৩ রান যোগ করল কেরল!
প্রথম ইনিংসের লিড ও অন্তত ৩ পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে বাংলার সামনে ৬৩ ওভারে (ম্যান্ডেটরি ওভার ছাড়া) ৩৫৭ রান তোলার চ্যালেঞ্জ ছিল। মনে করা হয়েছিল, ঘরের মাঠে সেই ঝুঁকি নেবে বাংলা। ঝাঁপাবে রানের জন্য। ওয়ান ডে ক্রিকেটের ঢঙে ব্যাটিং করবে।
পরিবর্তে যেটা দেখা গেল, তা অত্যন্ত রক্ষণাত্মক মানসিকতা। যা বাংলা ক্রিকেটের ট্রেডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে কার্যত। ৬৩ ওভারে বাংলা তুলল ১৮১/৩। ওভার প্রতি ২.৮৭ রান। এত মন্থর ব্যাটিং এখনকার দিনে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বড় একটা দেখা যায় না। দুই দলের একটি করে ইনিংসও শেষ না হওয়ায় ১ পয়েন্ট করে ভাগাভাগি হয়ে গেল।
কেন রান তাড়া করার জন্য ঝাঁপাল না বাংলা? অধিনায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার সাফ বলে দিলেন, 'দুই সেশনে ৩৫৭ রান করা যায় না।' বাংলার হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে ৬৭ রান করলেন শুভম দে। যিনি অভিমন্যু ঈশ্বরণের বদলি হিসাবে খেলেছেন এই ম্যাচে। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় করেন ৫৭ রান। ৯১ বলে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন সুদীপ ঘরামি। তাঁকে দেখে মনে হয়েছে, ম্যাচ বাঁচাতে নেমেছেন। আর এক অভিষেককারী অভিলীন ঘোষ রান পাননি (৩)। অনুষ্টুপ ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আগের দিনের ২৬৭/৭ স্কোরে খেলতে নেমে কেরল মঙ্গলবার আরও ৮৯ রান যোগ করে কেরল। তবে সলমন নিজার ৯৫ রানে থাকার সময়ও কেন ইনিংস ছেড়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে অনেকে বিস্মিত। বাংলার পক্ষে একমাত্র ইতিবাচক দিক হল ঈশান পোড়েলের ফর্মে ফেরা। ১০৩ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি।
শোনা গেল, ভেজা মাঠ শুকিয়ে ম্যাচ শেষ পর্যন্ত শুরু করতে পারার জন্য সিএবি-র কিউরেটর ও মাঠকর্মীদের প্রশংসা করেছে দুই শিবিরই। আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিও খুশি।
বাংলা শিবিরে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ৬ নভেম্বর বেঙ্গালুরুতে কর্নাটকের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচে মহম্মদ শামিকে পাওয়া যাবে কি না। কোচ লক্ষ্মী তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন। ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সি-তে বাংলা রয়েছে চার নম্বরে। হরিয়ানা, কেরল ও কর্নাটকের পিছনে। বাংলার ম্যাচ বাকি কর্নাটক, মধ্য প্রদেশ, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের সঙ্গে। নক আউটে ওঠার সম্ভাবনা জদিইয়ে রাখতে হলে অন্তত দুটি ম্যাচ সরাসরি জিততেই হবে বাংলাকে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।