কোয়েম্বাতোর: আইপিএলে (IPL) গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে পাঁচ ছক্কা মেরে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (KKR) রূপকথার ম্যাচে জিতিয়ে তিনি তখন হইচই ফেলে দিয়েছেন। বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার, বর্তমানে অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী তাঁকে নিয়ে বলেছিলেন, 'যারা বলে রিঙ্কু সিংহ শুধু টি-২০ ক্রিকেটার, তাঁরা খোঁজই রাখেন না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ছেলেটার প্রায় ষাট ব্যাটিং গড়। মোটেও আইপিএল খেলে ওঠেনি রিঙ্কু, বরং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উত্তর প্রদেশের হয়ে ধারাবাহিকভাবে রান করেছে।'
সৌরাশিস যে ভুল বলেননি, সেটা প্রমাণ হয়ে গেল কোয়েম্বাতোরে। রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন রিঙ্কু (Rinku Singh)। করলেন কেরিয়ারের সর্বোচ্চ ১৭৬ রান। শক্তিশালী তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে খাদের কিনারা থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান রিঙ্কুই। মহার্ঘ তিন পয়েন্ট এনে দিলেন উত্তর প্রদেশকে।
ন'বছর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল রিঙ্কু সিংহের। সব মিলিয়ে ৫২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রান করেছেন। ৯টি সেঞ্চুরি সহ ৫৯.০৭ ব্যাটিং গড়ে রান করেছেন। পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট যে, লাল বলের ক্রিকেটে সমান দক্ষতা রয়েছে রিঙ্কুর। যদিও বাঁহাতি এই ক্রিকেটারকে 'টি-২০ স্পেশালিস্ট' হিসাবেই ভাবা হয়। টেস্ট দলে কখনওই রিঙ্কুর কথা ভাবা হয়নি।
কোয়েম্বাতোরে প্রথমে ব্যাট করে ৪৫৫ রানের বড় স্কোর তোলে তামিলনাড়ু। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯১ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় উত্তরপ্রদেশ। সেখান থেকে পাল্টা লড়াই শুরু করেন রিঙ্কু। চাপের মুখে যেন নিজের সেরাটা বেরিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত ২৪৭ বলে ১৭৬ করে আউট হন তিনি। ১৭টি চার এবং ৬টি বিশাল ছক্কায় সাজানো তাঁর ইনিংস। এটাই তাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কেরিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
ভারতের টেস্টে কখনও সুযোগ পাননি। ভারত 'এ' দলের হয়েও লাল বলের ক্রিকেটে সুযোগ পান না। তবে তিনি যে লাল বলের ক্রিকেটেও ঝড় তুলতে পারেন, সেই প্রমাণ দিলেন রিঙ্কু। তাঁর ইনিংসে ভর করে উত্তরপ্রদেশ ৫ রানের লিড নিয়ে ৪৬০ রান তোলে। দ্বিতীয় ইনিংসে তামিলনাড়ুর রান যখন ২ উইকেটে ১০৩, খেলা অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকায় ৩ পয়েন্ট পায় উত্তর প্রদেশ। তামিলনাড়ুকে এক পয়েন্টেই সন্তুষ্ট থাকতে হল।