রাওয়ালপিন্ডি: ক্রিকেট যে আক্ষরিক অর্থেই অনিশ্চয়তার খেলা এবং ম্যাচের শেষ বল না গড়ালে ফলাফল কী হবে বোঝা মুশকিল, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের (PAK vs BAN 1st Test) চতুর্থ দিনের খেলাশেষে মনে হচ্ছিল ম্যাচ নিশ্চিতভাবে ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে। পিচ তেমন মদত নেই, ব্যাটাররা রানও পাচ্ছেন। কিন্তু পঞ্চম দিনে সব হিসেবনিকেশ বদলে গেল। থুরি বদলে দিলেন বাংলাদেশের দুই স্পিনার, শাকিব আল হাসান (Shakib al Hasan) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (Mehidy Hasan Miraz)।


পঞ্চম দিনে শাকিবের তিন ও মেহেদি হাসান মিরাজের চার উইকেটে ভর করে বাংলাদেশ দুরন্ত জয় পেল। দুই স্পিনারের ভেল্কিতে দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান মাত্র ১৪৬ রানে অল আউট হয়ে যায়। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকানো মহম্মদ রিজওয়ানই একমাত্র পাকিস্তানি ব্যাটার হিসাবে খানিকটা লড়াই করেন। ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। আব্দুল্লা শফিক করেন ৩৭। 


চতুর্থ দিনের শেষে পাকিস্তান ১ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের থেকে ৯৪ রানে পিছিয়ে ছিল। আপাতভাবে ম্যাচ ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছিল। কিন্তু পঞ্চম দিন প্রথম সেশনে মাত্র ২৬ ওভারে ৮৫ রানের বিনিময়ে পাকিস্তান পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে। এই সেশনই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়। শাকিব এবং মিরাজ উইকেট তো পানই তবে তরুণ পেসার নাহিদ রানার গতি সকলকে প্রভাবিত করেন।


নিরন্তর ১৪৫-র বেশি গতিতে বল করেন তিনি। বাবর আজমের বিরুদ্ধে তাঁর বোলিং স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাবরকে একের পর এক বাউন্সারে ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে সক্ষম হন নাহিদ। তারপর ফুল বলে বাবর ড্রাইভ করতে গেলে বল তাঁর ব্যাটে লেগে স্টাম্প ভেঙে দেয়। বাবর আউট হলেও রিজওয়ান লড়াই করছিলেন বটে। তবে তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি। 


পাকিস্তানের লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের স্কোর যথাক্রমে ০, ২, ৩, ৫, ০। এই ব্যাটিং ভরাডুবিই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিল। বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। কোনও উইকেট না হারিয়েই ওপার বাংলার দল সহজেই ম্যাচ জিতে সিরিজ়ে এগিয়ে গেল। এই পরাজয়ের ফলে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের হতাশাজনক টেস্ট রেকর্ড অব্যাহত থাকল। ২০২১ সাল থেকে পাকিস্তান ঘরের মাঠে একটি টেস্ট ম্যাচও জেতেনি। পাঁচটি ম্যাচ ড্র করেছে এবং এই নিয়ে পঞ্চম ম্যাচে পরাজিত হল তাঁরা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই প্রথমবার টেস্টে ১০ উইকেটে জয় পেল বাংলা টাইগাররা।



















আরও পড়ুন: শনিবারই বাবা হয়েছেন, উইকেট নিয়ে সদ্যোজাতকে উৎসর্গ করে বিশেষ সেলিব্রেশন শাহিনের