কলকাতা: নভেম্বর মাসের পর ডিসেম্বর। আবার সল্ট লেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ। ফের 'ভুল বোঝাবুঝি'র জন্য বিপত্তি বঙ্গ ক্রিকেটে (CAB News)!
নভেম্বর মাসে সল্ট লেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ ভিজে থাকায় সিএবি পরিচালিত জে সি মুখোপাধ্যায় টি-২০ টুর্নামেন্টে কলকাতা পুলিশ বনাম কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ম্যাচ ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়েছিল। ওভার সংখ্যা কমিয়ে ৭ ওভার করে ম্যাচ হয়েছিল। বিতর্কের মূলে ছিল 'সমন্বয়ের অভাব'। অভিযোগ উঠেছিল, মাঠে ম্যাচ রয়েছে জানতেনই না মাঠকর্মীরা। যে কারণে আগের দিন বিকেলে পিচে জল দেওয়া হয়েছিল।
ফের একই বিপত্তি। এবার ভুক্তভোগী বাংলার সিনিয়র দল। বিজয় হাজারে ট্রফি খেলতে রাজকোট রওনা হওয়ার আগে সল্ট লেক মাঠে দুদিনের অনুশীলন রেখেছিলেন বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। কিন্তু শুক্রবার সকালে মাঠে গিয়ে বাংলার ক্রিকেটারেরা আবিষ্কার করেন যে, প্র্যাক্টিস পিচ ভিজে। বাধ্য হয়ে কিছুক্ষণ ফিল্ডিং অনুশীলন সারেন অভিমন্যু ঈশ্বরণরা। তবে অপেক্ষা করার পরেও পিচ শুকোয়নি। ফিজিক্যাল ট্রেনিং করে মাঠ ছাড়েন বাংলার ক্রিকেটারেরা। তাঁরা খুব একটা খুশি হয়েছেন বলে খবর নেই। বরং সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-২০ টুর্নামেন্টের ব্যর্থতা ভুলতে যে ওয়ান ডে টুর্নামেন্টকে পাখির চোখ করা হচ্ছে, তার প্রথম প্রস্তুতি ভেস্তে যাওয়ার বিরক্তি রয়েছে শিবিরে।
কিন্তু কেন বাংলার প্র্যাক্টিস ভেস্তে গেল? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এবারও নেপথ্যে 'ভুল বোঝাবুঝি '। শুক্রবার সকালে যে বাংলার প্র্যাক্টিস রয়েছে তা নাকি জানতেনই না মাঠকর্মীরা! কেন তাঁদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ খবর পৌঁছল না? সল্ট লেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ দেখাশোনা করার দায়িত্ব সদ্য একজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সিএবি-র সেই কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেরও উত্তর দেননি।
সিএবির প্রধান কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় অবশ্য রাখঢাক করলেন না। বললেন, 'শুক্রবার বাংলা দল যে প্র্যাক্টিস করবে, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় তা জানতে পারি। ততক্ষণে মাঠ ও পিচ পরিচর্যার কাজ ও জল দেওয়া হয়ে গিয়েছিল।' আরও বললেন, 'বাংলা দলের ১০টায় প্র্যাক্টিস করতে আসার কথা ছিল। ওরা সাড়ে আটটায় চলে আসে। আর একটু সময় দিলেই পিচ শুকিয়ে যেত।'
তবে এবার আরও সতর্ক হচ্ছেন সুজন। বললেন, 'আজ রাতে চট দিয়ে পিচ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কাল প্র্যাক্টিসে সমস্যা হবে না।'
ঘটনা হচ্ছে, শুক্রবারই এস এ টি-২০ টুর্নামেন্টে প্রিটোরিয়া ক্যাপিটালস শিবিরে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে গেলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর সেদিনই বিপত্তি। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার ট্রফি খরা চলছেই। বিজয় হাজারে ট্রফির আগে প্রস্তুতি নিয়েও বিভ্রাট বাংলা ক্রিকেটে। দলের মধ্যে চাপা অসন্তোষও রয়েছে বলে খবর।
নেতৃত্বে অভিমন্যু
বিজয় হাজারে ট্রফির জন্য বাংলা দল ঘোষণা করা হল। নেতৃত্বে অভিমন্যু ঈশ্বরণ। দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ দলের অধিনায়ক চন্দ্রহাস দাশকে। অনূর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে ভাল পারফর্ম করা উইকেটকিপার সুমিত নাগ, রবি কুমারও বাংলার বিজয় হাজারে ট্রফির দলে রয়েছেন। প্রথম তিন ম্যাচের দলে মহম্মদ শামি, অনুষ্টুপ মজুমদার, শাহবাজ আমেদদের রাখা হয়েছে।
এলিট গ্রুপ বি-তে রয়েছে বাংলা। ২৪ ডিসেম্বর রাজকোটে বিদর্ভ ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু হবে অভিমন্যুদের। এরপর বাংলার প্রতিপক্ষ যথাক্রমে বঢোদরা (২৬ ডিসেম্বর), চণ্ডীগড় (২৯ ডিসেম্বর), জম্মু ও কাশ্মীর (৩১ ডিসেম্বর), অসম (৩ জানুয়ারি), হায়দরাবাদ (৬ জানুয়ারি) ও উত্তর প্রদেশ (৮ জানুয়ারি)।
ঘোষিত বাংলা দল
অভিমন্যু ঈশ্বরণ (অধিনায়ক), অনুষ্টুপ মজুমদার, অভিষেক পোড়েল (উইকেটকিপার), সুদীপ কুমার ঘরামি, সুমন্ত গুপ্ত, সুমিত নাগ (উইকেটকিপার), চন্দ্রহাস দাশ, শাহবাজ আমেদ, করণ লাল, মহম্মদ শামি, আকাশ দীপ, মুকেশ কুমার, সায়ন ঘোষ, রবি কুমার, আমির গনি, বিশাল ভাটি ও অঙ্কিত মিশ্র।