রিও ডি জেনেইরো: প্রকাশ্যে আবেগ প্রকাশ করেননি। অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হওয়ার পরেও মুখে হাসি লেগে ছিল। কিন্তু গেমস ভিলেজে নিজের ঘরে ফেরার পর আর ইতিহাসের এত কাছে এসেও খালি হাতে ফেরার যন্ত্রণা চেপে রাখতে পারেননি দীপা কর্মকার। তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী সেই কান্না থামাতে পারছিলেন না। তিনিই দীপার এই মানসিক যন্ত্রণার কথা জানিয়েছেন। ছাত্রী পদক হারানোয় বিশ্বেশ্বরও বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন।

 

দীপার কোচ বলেছেন, ‘ভল্ট ফাইনাল শেষ হওয়ার পর গেমস ভিলেজে ফিরেই দীপা কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। কোনও সান্ত্বনাই শুনছিল না ও। অল্পের জন্য ব্রোঞ্জ হাতছাড়া হওয়ার বিষয়টি ও কিছুতেই মানতে পারছিল না। সবাই খুশি হয়েছিল। কিন্তু আমাদের মনে হচ্ছিল সব হারিয়ে ফেলেছি। তা-ও এত অল্পের জন্য। এটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে খারাপ স্বাধীনতা দিবস। আমি বিশ্বের সবচেয়ে দুঃখিত কোচ। এই আফশোস ভুলে যাওয়া কঠিন।’

 

ভল্ট ফাইনালে ১৫.০৬৬ পয়েন্ট পান দীপা। সফলভাবে প্রদুনোভা ভল্ট দেন ত্রিপুরার এই বাঙালি জিমন্যাস্ট। কিন্তু মাটিতে পড়ার সময় তিনি বসে পড়েন। সেই কারণেই তাঁর পয়েন্ট কমে যায় বলেই মনে করছেন বিশ্বেশ্বর। তিনি বলছেন, ‘দীপা জীবনের সেরা ভল্ট দিয়েছে অলিম্পিক ফাইনালে। কিন্তু তাতেও বিচারকদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। হয়তো বসে পড়েছিল বলেই। অন্য জিমন্যাস্টরা যখন এক বছর ধরে অলিম্পিকের জন্য তৈরি হয়েছে, আমাদের হাতে তখন প্রস্তুতির জন্য মাত্র তিন মাস ছিল। তাতেও এই পারফরম্যান্স দেখিয়েছে দীপা।’

 

প্রথমে ভেঙে পড়লেও, এখন পরবর্তী অলিম্পিকের জন্য তৈরি হতে চাইছেন দীপা। তাঁর কোচেরও একই মত। তিনিই দীপাকে প্রশিক্ষণ দিতে চাইছেন। বিদেশি কোচের চেয়ে তিনি কোনও অংশে কম দক্ষ নন বলেই মনে করেন বিশ্বেশ্বর। তিনি শুধু ২০২০ টোকিও অলিম্পিকের আগে দীপার জন্য উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা চাইছেন। আর চাইছেন, পরের অলিম্পিকের সময় দীপা পুরোপুরি ফিট থাকুন। তাহলেই পদক আসবে বলে আশাবাদী দীপার কোচ।