কলকাতা: লাল হলুদের চুক্তি-জটিলতা কাটাতে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ইস্টবেঙ্গলের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক। চুক্তি বিতর্ক নিয়ে এদিন চিঠি দিয়েছেন ক্লাবের অন্যতম সদস্য সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে যে-সমস্ত শর্তাবলী রয়েছে, তাতে ক্লাবের সই করা উচিত নয়। প্রথমত, চুক্তিপত্রে ক্লাব ও ইনভেস্টর দু’পক্ষেরই এক্সিট ক্লসের সুযোগ থাকা উচিত, এক্ষেত্রে ইনভেস্টরের জন্য সে দরজা খোলা থাকলেও ক্লাবের এমন কোনও সুযোগ নেই। চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে ইনভেস্টরের হাতে ক্লাব হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে, যা মেনে নেওয়া যায় না। তৃতীয়ত, চূড়ান্ত চুক্তিতে উল্লেখ, ক্লাব সদস্যরা অনুমতি ছাড়া ক্লাবে ঢুকতে পারবেন না।
ইস্টেবঙ্গল ক্লাবের হয়ে ১৪ বছর খেলেছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার সম্বরন বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী ১২ বছর অধিনায়কও ছিলেন। তিনি এই বিষয়ে মুখ খুলেন বলেন, 'ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে শ্রী সিমেন্টের চুক্তির কাগজ দেখেছি। ওখানে ওরা পরিষ্কার বলেছিল যে ২ বছরের জন্য ফুটবলের স্বত্বটা শ্রী সিমেন্টকে দিচ্ছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা পুরো ক্লাবটাই নিজেদের দখলে নিয়ে নিতে চায়। ক্লাবে ঢুকতে সবার জন্যই অনুমতি স্বাপেক্ষ হয়ে যাবে। কিন্তু এমনটা তো করা কখনওই উচিত নয়। মোহনবাগান যেমন শুধুমাত্র এটিকেকে ফুটবল স্বত্ব দিয়েছে। সেই মতোই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও তেমনই চেয়েছিল।' প্রাক্তন বঙ্গ অধিনায়ক আরও বলেন, 'এক বছর খেলা হয়ে গিয়েছে। এখন এমনটা কেন করা হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমর্থকরদের অধিকারও যেন বিনিয়োগকারীদের হাতে। এটা কখনও কাম্য নয়।'
কিছুদিন আগেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মসমিতির বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হয়নি। এবার তাই কার্যকারী সমিতির বৈঠকে কোনও সুরাহা হয় কিনা তা দেখার। সূত্রের খবর, বৈঠকের আগে প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ক্লাবে এসে তাঁর বক্তব্য রাখতে পারেন। উল্লেখ্য, গত বুধবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবেরই দুই সমর্থকগোষ্ঠীর বিবাদের জেরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ময়দানে। লাল-হলুদ ক্লাবের সামনে একদল ইস্টবেঙ্গল সমর্থক বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচি রেখেছিলেন। তাদের দাবি ছিল, ইনভেস্টরের চুক্তিপত্রে দ্রুত সই করে যাতে আইএসএল খেলার পথ সুগম করেন লাল-হলুদ কর্তারা। অপরদিকে অন্যদল সমর্থকদের দাবি ছিল, ইনভেস্টরের পাঠানো চুক্তিপত্রে সই করলে ক্লাবের স্বার্থে আঘাত লাগবে, তাদের কথা মতো 'ক্লাব বেচে দেওয়া যাবে না ইনভেস্টরদের'। আর দুই দলের যে বিবাদে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সামনের এলাকা।