কলকাতা: মরসুমের শুরুতেই গোলশূন্য ড্র করল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। সোমবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তারা ভারতীয় নৌসেনার দলের বিরুদ্ধে একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েও কোনও গোল করতে পারেনি। সারা ম্যাচে আটটি গোলমুখী শট নিলেও গোলের খাতা খুলতে পারেনি।


ডুরান্ড কাপের (Durand Cup) প্রথম ম্যাচে ড্রয়ের ফলে লাল-হলুদ বাহিনী এক পয়েন্ট পেয়ে গ্রুপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এটিকে মোহনবাগানের চেয়ে এগিয়ে থাকল। প্রথম ম্যাচে রাজস্থান ইউনাইটেডের কাছে তারা হারায় এখনও লিগ তালিকায় খাতা খুলতে পারেনি সবুজ-মেরুন শিবির। এ দিন প্রথম পয়েন্ট অর্জন করল নৌসেনার দলও। প্রথম ম্যাচে তারা মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হেরে যাওয়ায় এই ম্যাচে বিনা পয়েন্টেই মাঠে নেমেছিল তারা।


এ দিন প্রথম দশ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে নেয় বিদেশিহীন ইস্টবেঙ্গল একাদশ। ন’মিনিটের মাথায় প্রথমে ফ্রিকিক থেকে ও তার পরের মিনিটেই কর্নার থেকে গোলের সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি লাল-হলুদ শিবির।


ম্যাচের শুরুতে তাদের আক্রমণ বিভাগের অন্যতম সেরা অস্ত্র নাওরেম মহেশকেও চোট পেয়ে মাঠের বাইরে যেতে হয়। তবে অমরজিৎ সিংহ কিয়াম, ভিপি সুহের-রা বিপক্ষকে চাপে রাখার কাজ চালিয়ে যান। ২১ মিনিটের মাথায় অমরজিৎ বক্সের মাঝখানে গোলের সুযোগও পেয়ে যান। তবে বারের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন। সুহের একাধিক আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বিপক্ষের রক্ষণের তৎপরতায়।  


প্রথম ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে  ১-৪-এ হারা নৌসেনা দল শুরুর দিকে কিছুটা আগোছালো ফুটবল খেললেও ক্রমশ তারা নিজেদের গুছিয়ে নেয়। মোহনবাগান, নর্থইস্ট ইউনাইটেডের হয়ে খেলা ফরওয়ার্ড ব্রিটোকে কেন্দ্র করে গড়া তাদের আক্রমণ বিভাগ মাঝে মাঝে তৎপর হয়ে উঠলেও দুর্ভেদ্য লাল-হলুদ রক্ষণে আটকে যায় তারা। ৩৭ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া পিন্টু মাহাতোর গোলমুখী জোরালো শট আটকে দেন গোলকিপার কমলজিৎ সিংহ।


প্রথমার্ধে কোনও দলই সে ভাবে আক্রমণ-নির্ভর ফুটবল খেলার চেষ্টা না করে একে অপরকে পরখ করার জ্ন্যই বেশি সময় দেয়। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল গোলে বেশি শট নিলেও (৫-৩) বল দখলে নৌসেনা দলই এগিয়ে ছিল (৫৫-৪৫)।


দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলীয় মিডফিল্ডার অ্যালেক্স লিমা ও ডিফেন্ডার মহম্মদ রকিপকে নামান ইস্টবেঙ্গলের কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন। লিমা মাঠে নামার পরে লাল-হলুদের আক্রমণে ধার কিছুটা বাড়ে। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে কাজের কাজটা করতে পারেনি তারা। ৫৭ মিনিটের মাথায় বিপক্ষের বক্সের সামনে থেকে ফ্রি কিক পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। সোজা ওয়ালে আটকে যায় লিমার শট।


৭৫ মিনিটের মাথায় ওয়ান টু ওয়ান অবস্থায় গোলের সুযোগ পেয়ে যান ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক সুমিত পাসি। কিন্তু তাঁর শট আটকে দেন নৌসেনার গোলরক্ষক বিষ্ণু। তাঁর কাছ থেকে ফিরে আসা বলে বক্সের মাথা থেকে লিমা শট নিলেও তা গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি সম্ভবত পান সুমিতই।


নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার সাত মিনিট আগে বক্সের বাঁ দিক থেকে দেওয়া তুহিনের ক্রস যে সুযোগ এনে দেয় সুমিত ও সুহেরকে, তাও খুব একটা কঠিন ছিল না। গোলের সামনে সুমিত ও দ্বিতীয় পোস্টে থাকা সুহের বলে ঠিকমতো পা লাগাতে পারলে হয়তো গোল পেয়ে যেত লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু দুজনই ব্যর্থ হন। ৮৮ মিনিটের মাথায় ফের গোল লাইন সেভ করেন নৌসেনার ডিফেন্ডাররা।


ইস্টবেঙ্গল দল: কমলজিৎ সিংহ (গোল), লাল চুঙনুঙ্গা, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়, প্রীতম কুমার সিংহ, অনিকেত যাদব (মহম্মদ রকিপ), অমরজিৎ সিংহ কিয়াম (শৌভিক চক্রবর্তী), ওয়াহেংবাম লুয়াং (মহীতোষ রায়), মহম্মদ মোবাশির রহমান (অ্যালেক্স লিমা), সুমিত পাসি (অধিনায়ক), ভিপি সুহের, নাওরেম মহেশ সিংহ (তুহিন দাস)।


আরও পড়ুন: ভেঙেছেন কিংবদন্তির রেকর্ড, তবে সচিনের সঙ্গে শুভমনের তুলনা চান না বাবা