দোহা: আর্জেন্তিনার জার্সিতে বিশ্বকাপে নতুন এক উচ্চতা স্পর্শ করলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে গোল করা ও করানো মেসিকে যা নতুন আত্মবিশ্বাস জোগাবে।


বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের বয়স তখন ৭৩ মিনিট। নেদারল্যান্ডস বক্সে আচমকা ঢুকে পড়া আকুনাকে ফাউল করা হয়। পেনাল্টি দেন রেফারি। গোল করে ম্যাচ ২-০ করেন মেসি। চলতি বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ গোল। আর এই গোল করেই গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছুঁয়ে ফেললেন মেসি।


বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনার জার্সিতে ১০ গোল হয়ে গেল মেসির। যে নজির রয়েছে একমাত্র বাতিস্তুতার। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আর এক গোল করলেই বাতিগোলকে টপকে যাবেন মেসি।


ম্যাচে ২-০ এগিয়ে যাওয়ার পরেও নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকারে হারাতে হল আর্জেন্তিনাকে। ম্যাচ তখন সম্পূর্ণরূপে আর্জেন্তিনার হাতে। মনে করা হচ্ছিল, নেদারল্যান্ডসকে রীতিমতো উড়িয়ে সেমিফাইনালে যাবে আর্জেন্তিনা। ২-০ ব্যবধান আর জয় কার্যত নিশ্চিত মনে করা হচ্ছিল।


কিন্তু অন্যরকম কিছু ভেবেছিলেন উট ওয়েগহোর্স্ট। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতে তখন মিনিট সাতেক বাকি। স্টিভেন বার্গহুইসের পাস থেকে জোরাল হেডে ২-১ করেন ওয়েগহোর্স্ট। এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ লগ্ন। নিজেদের বক্সের বাইরে অহেতুক ফাউল করেন পাজেল্লা। ফ্রি কিক দেন রেফারি। ইনজুরি টাইমের একেবারে শেষের দিকে সেই ফ্রি কিক থেকে ফের গোল করেন ওয়েগহোর্স্ট। ম্যাচ ২-২ হয়ে যায়।


৯০ মিনিটে ফয়সালা না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে অতিরিক্ত সময়ের দুই অর্ধেই কোনও দল কোনও গোল করতে পারেনি। একমাত্র এনজো ফার্নান্দেজের একটি শট পোস্টে লেগে ফেরে। উল্টে মাঠের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকবার বচসা, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ফুটবলাররা। হলুদ কার্ডের বন্যা বয়ে যায়। রেফারি আন্তোনিও মিগুয়্যেল মাতেও লাহোজ মেসিকেও হলুদ কার্ড দেখান। পাশাপাশি হলুদ কার্ড দেখায় পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না আকুনা।


তবে টাইব্রেকারে নায়ক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর্জেন্তিনার কোপা আমেরিকা জয়ের নেপথ্যেও যাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে টাইব্রেকারে নায়ক ছিলেন 'দিবু' নামে পরিচিত গোলকিপার। ভারতীয় সময় শনিবার ভোরেও টাইব্রেকারে অনবদ্য পারফরম্যান্স। প্রথম শট নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ফান ডাইকের শট শরীর শূন্যে ছুড়ে রুখে দেন দিবু। আর্জেন্তিনার প্রথম শটে গোল করেন মেসি। ডাচদের দ্বিতীয় শটও রুখে দেন এমিলিয়ানো। স্টিফেন বারগুইসের শট বাঁচান তিনি। লিয়ান্দ্রো পারাদেস ২-০ করেন। একমাত্র এনজো ফার্নান্দেজ ছাড়া আর্জেন্তিনার বাকি চার শটেই গোল হতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় মেসিদের।


আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ঈন্দ্রপতন, শেষ চারে ক্রোয়েশিয়া, টাইব্রেকারে হার ব্রাজিলের