দোহা: ম্যাচ শুরুর আগেই আর্জেন্তিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেছিলেন, টাইব্রেকারে নয়, ৯০ মিনিটের মধ্যে ম্যাচ জেতাই লক্ষ্য তাঁদের। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে তখন ২-০ গোলে এগিয়ে আর্জেন্তিনা। ম্যাচের বাকি আর ৭ মিনিট। কে জানত এই ম্যাচই রুদ্ধশ্বাস পরিণতির দিকে এগোবে? আর শেষ পর্যন্ত ফয়সালা হবে টাইব্রেকারেই।


টাইব্রেকারে অবশ্য ফের দুর্ভেদ্য এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর্জেন্তিনার গোলকিপার রুখে দিলেন দুটি শট। নেদারল্যান্ডসকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল আর্জেন্তিনা। সেখানে লিওনেল মেসিদের খেলতে হবে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে।


ডাচদের বিরুদ্ধে গোল করে ও করিয়ে নায়ক লিওনেল মেসি। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে চারজন ডাচ ফুটবলারের মধ্যে দিয়ে অবিশ্বাস্য পাস বাড়ালেন মেসি। সেই থ্রু থেকে গোল করলেন নাহুয়েল মোলিনা। আর্জেন্তিনার জার্সিতে প্রথম গোল। বিরতির আগেই ১-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্তিনা। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে আকুনাকে ফাউল করা হয়। পেনাল্টি দেন রেফারি। গোল করে ২-০ করেন মেসি। ম্যাচ তখন সম্পূর্ণরূপে আর্জেন্তিনার হাতে। মনে করা হচ্ছিল, নেদারল্যান্ডসকে রীতিমতো উড়িয়ে সেমিফাইনালে যাবে আর্জেন্তিনা।


কিন্তু অন্যরকম কিছু ভেবেছিলেন উট ওয়েগহোর্স্ট। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতে তখন মিনিট সাতেক বাকি। স্টিভেন বার্গহুইসের পাস থেকে জোরাল হেডে ২-১ করেন ওয়েগহোর্স্ট। এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ লগ্ন। নিজেদের বক্সের বাইরে অহেতুক ফাউল করেন পাজেল্লা। ফ্রি কিক দেন রেফারি। ইনজুরি টাইমের একেবারে শেষের দিকে সেই ফ্রি কিক থেকে ফের গোল করেন ওয়েগহোর্স্ট। ম্যাচ ২-২ হয়ে যায়।


৯০ মিনিটে ফয়সালা না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে অতিরিক্ত সময়ের দুই অর্ধেই কোনও দল কোনও গোল করতে পারেনি। একমাত্র এনজো ফার্নান্দেজের একটি শট পোস্টে লেগে ফেরে। উল্টে মাঠের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকবার বচসা, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ফুটবলাররা। হলুদ কার্ডের বন্যা বয়ে যায়। রেফারি আন্তোনিও মিগুয়্যেল মাতেও লাহোজ মেসিকেও হলুদ কার্ড দেখান। পাশাপাশি হলুদ কার্ড দেখায় পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না আকুনা।


তবে টাইব্রেকারে নায়ক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর্জেন্তিনার কোপা আমেরিকা জয়ের নেপথ্যেও যাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে টাইব্রেকারে নায়ক ছিলেন 'দিবু' নামে পরিচিত গোলকিপার। ভারতীয় সময় শনিবার ভোরেও টাইব্রেকারে অনবদ্য পারফরম্যান্স। প্রথম শট নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ফান ডাইকের শট শরীর শূন্যে ছুড়ে রুখে দেন দিবু। আর্জেন্তিনার প্রথম শটে গোল করেন মেসি। ডাচদের দ্বিতীয় শটও রুখে দেন এমিলিয়ানো। স্টিফেন বারগুইসের শট বাঁচান তিনি। লিয়ান্দ্রো পারাদেস ২-০ করেন। একমাত্র এনজো ফার্নান্দেজ ছাড়া আর্জেন্তিনার বাকি চার শটেই গোল হতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় মেসিদের।


আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ঈন্দ্রপতন, শেষ চারে ক্রোয়েশিয়া, টাইব্রেকারে হার ব্রাজিলের