কলকাতা: গত ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়ে ১৩টি গোল করে সেরা গোলদাতার সন্মান অর্জন করে নেন যে গ্রিক ফরোয়ার্ড, সেই দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস এ বার ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়েছেন। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে একটি ম্যাচ খেলা হয়েও গিয়েছে তাঁর। সোমবার ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে নামেন তিনি এবং গোলও পান।



গত মরশুমে ভাল খেললেও বেশি গোল করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলে তারা ২৭টি গোল করে। গোল করার দিক থেকে তাদের পিছনে ছিল মাত্র তিনটি দল। এ বার তাই আক্রমণ বিভাগকে ঢেলে সাজিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। তাঁর পরামর্শে ক্লেটন সিলভার সঙ্গে দিয়ামান্তাকস, মাদি তালালদের মতো বিদেশি অ্যাটাকারদের জুড়ে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। তাই এ বার গোলের সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশা সমর্থকদের।

সোমবার ডুরান্ড কাপের ম্যাচে তারই এক ঝলক দেখা গেল। সে দিন দিয়ামান্তাকস ও মাদি তালাল নেমেছিলেন মাঠে। তালাল শুরু থেকে খেললেও ইস্টবেঙ্গলের ‘দিমি’ নামেন দ্বিতীয়ার্ধে। দিয়ামান্তাকস নামার পরেই দলের চেহারা পাল্টে যায় এবং ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত করে ফেলে তারা। ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচেই গোল পেয়ে খুশি দিয়ামান্তাকস বলেন, ''গোল করতে পারলে খুবই আনন্দ পাই আমি। দলকে জিততে সাহায্য করেছি, ভাল লাগছে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আরও ম্যাচ জিতব।'' সমর্থকদের দেখে মুগ্ধ গ্রিক ফরোয়ার্ড বলেন, ''আমাদের জেতানোর জন্য স্টেডিয়ামে যে পরিবেশ তৈরি করেছে সমর্থকেরা, সে জন্য প্রত্যেককে ধন্যবাদ। আমি চাই, প্রত্যেক ম্যাচে সমর্থকেরা সবাই আসুক। আমরা ওদের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দেব।''

দিয়ামান্তাকস আইএসএলে প্রথমে কেরালা ব্লাস্টার্সে যোগ দেন ২০২২-এ এবং গত দুই মরশুমে ৩৮টি ম্যাচে ২৩টি গোল করেছেন। ছ’টি গোলে অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি। আইএসএলে প্রথম মরশুমে দশটি গোল করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আরও এক মরশুম থাকলে তিনি দলকে আরও সাফল্য এনে দিতে পারেন। মাঠের মধ্যে তাঁর ক্যারিশমা তো সারা দুনিয়া দেখেছে। কিন্তু মাঠের বাইরে, ড্রেসিংরুমে দলনেতা ও রোল মডেল হয়ে ওঠার যে ক্ষমতা দেখিয়েছেন দিয়ামান্তাকস, তাও প্রশংসনীয়।

গ্রিসের জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন এই সফল ফরোয়ার্ড। ২০১২-য় উয়েফা ইউরোপিয়ান অনূর্ধ্ব ১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স আপ গ্রিক দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। নিজের দেশ ছাড়াও জার্মানি, ক্রোয়েশিয়া ও ইজরায়েলের ক্লাব ফুটবলেও খেলেছেন তিনি। গত মরশুমের অনেকটা সময়ই ব্লাস্টার্সের হয়ে মাঠে নামতে পারেননি আদ্রিয়ান লুনা। অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। সেই সময়েও যে ভাবে দলকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন এই গ্রিক ফরোয়ার্ড, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। যে ভাবে প্রায় প্রতি ম্যাচে বিপক্ষের গোল এরিয়ায় সবচেয়ে বড় ত্রাস হয়ে ওঠেন তিনি, তার কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। নিজের জন্য যেমন জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন, তেমনই প্রতিপক্ষের গোলের সামনে সতীর্থদের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন বারবার। গোলের নিখুঁত পাসও বাড়িয়েছেন অনেক। এ বার ইস্টবেঙ্গলও তাঁর এই জাদুর ছোঁয়া লাগতে শুরু করে দিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।     তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল