কলকাতা: ইন্ডিয়ান সুপার লিগের প্রথম ম্যাচ, তাও নিজেদের শহরে। এই ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখতে জয়ই সেরা রাস্তা। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে আইএসএলের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী মহমেডান স্পোর্টিং, সেই নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি যদি তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে, তা হলে তাদের কাজ মোটেই সোজা হবে না। 


ডুরান্ড কাপের ফাইনালে দু’গোলে পিছিয়ে থাকা নর্থইস্ট বিরতির পরে যে ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ও পাল্টা লড়াইয়ে ফিরে এসে দু’টি গোলই শোধ করে, তার কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। এই অসাধারণ প্রত্যাবর্তনেরই পুরস্কার তারা পায় টাই ব্রেকারে। জোড়া সেভ করে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে খেতাব এনে দেন তাদের তরুণ গোলকিপার গুরমিত সিং চহাল। সারা টুর্নামেন্টেই সফল আত্মবিশ্বাসী নর্থইস্টের সামনে সোমবার আইএসএলের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি সদ্য আইলিগ থেকে প্রোমোশন পেয়ে উঠে আসা মহমেডান স্পোর্টিং। 


কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব যে শুরুতেই এক কঠিন পরীক্ষার সামনে, তা বলাই যায়। কারণ, নর্থইস্টের মতো তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তেমন ভাল নয়। ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছে তারা। একটি জয়, একটি ড্র ও একটি ম্যাচে হারে তারা। প্রস্তুতিও যে অনেক আগে থেকে শুরু করেছে তারা, তাও নয়। তাই প্রথম ম্যাচে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে আছে। তবে আইএসএল মানেই অঘটন, অপ্র্যত্যাশিত ফল। সোমবার কলকাতার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে সেরকম কিছু হলে অবাক হবেন না। 


গত মরশুমে ১৩ দলের আই লিগে ২৪টি ম্যাচে ১৫টি জয় ও সাতটি ড্র-সহ মোট ৫২ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া মহামেডান স্পোর্টিং দু’জন নির্ভরযোগ্য ফুটবলারকে বিদায় জানিয়েছে, এডি হার্নান্দেজ ও ডেভিড লালনসাঙ্গাকে। গত মরশুমে আই লিগে তাদের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন হার্নান্দেজ ও ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল করেছিলেন ডেভিড।


তবে কয়েকজন নতুন ফুটবলার এ বার যোগ দিয়েছেন, যেমন সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর পেশাদার লিগে খেলা ফরোয়ার্ড সিজার মানজোকি, যিনি আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও চিনের সুপার লিগে প্রতিভার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার অ্যালেক্সি গোমেজ গোল করা ও করানো, দুইয়েই সমান পারদর্শী। গত মরশুমে তিনিই সতীর্থদের সবচেয়ে বেশি গোলের পাস সরবরাহ করেন। সেট পিসেও তিনি যথেষ্ট বিপজ্জনক। দুই খেলোয়াড়ই মহমেডান শিবিরে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।


এ ছাড়া গৌরব বোরা, সামাদ আলি মল্লিক, আমরজিৎ সিং কিয়াম, রোচারজেলা, মকান চোথের মতো আইএসএলে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দেশীয় ফুটবলাররাও রয়েছেন দলে। এঁরা ভাল খেললে সাদা-কালো বাহিনী আইএসএলের লিগ টেবলে উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে। দলটির বড় ভরসা তাদের গোলকিপার পদম ছেত্রী। গত আই লিগের সেরা গোলকিপার আটটি ম্যাচে ক্লিন শিট রেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। সম্ভবত ছেত্রী হতে চলেছেন কোচ চেরনিশভের প্রথম এগারোয় অবধারিত বাছাই।                                                                                                 তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল মিডিয়া