কলকাতা: রবিবার ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরু এফসি-র (Bengaluru FC) বিরুদ্ধে তাঁর দল যে উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নামবে, তা জানিয়ে দিলেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) হেড কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat)। রবিবারের এই ম্যাচেই বোঝা যাবে, সেরা ছয়ের মধ্যে থাকার কোনও সম্ভাবনা ইস্টবেঙ্গলের আছে কি না। 


সুনীল ছেত্রীর দল এ বার লিগে মোটেই ভাল ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি। তবে গত ম্যাচে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে তাদের গোলশূন্য ড্র তাদের আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে কেরল ব্লাস্টার্সকেও হারায় তারা, হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও জেতে। এই সাফল্যগুলিই তাদের ফের ছ’নম্বরের দৌড়ে উজ্জ্বল করে তুলেছে।


কার্ড সমস্যার জন্য বুধবার কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে সাইডলাইনে থাকতে পারেননি কুয়াদ্রাত। এই ম্যাচে সাইডলাইনে ফিরছেন তিনি। দলের ছেলেদের বরাবরই উজ্জীবিত করে থাকেন। এখন আরও বেশিই উজ্জীবিত করছেন এবং তাঁর ধারণা, লাল-হলুদ শিবিরের ফুটবলাররা রবিবার যথেষ্ট উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নামবেন। 


শনিবার সাংবাদিকদের কুয়াদ্রাত বলেন, “দলের ছেলেরা যথেষ্ট উজ্জীবিত। গত ম্যাচের আগেও আমরা নিজেদের মধ্যে অনেক ভাল ভাল কথা বলেছিলাম। যেখানে আমি বলেছিলাম, এখন আমাদের ঠিক কী করতে হবে। তাই আমি বেঞ্চে না থাকলেও কোনও সমস্যা হয়নি। কারণ, ওদের কী করতে হবে, তা জানা ছিল। কালও ব্যাপারটা একই। কাল ছেলেরা উজ্জীবিত হয়ে মাঠে নামবে। কারণ, ওরা জানে যে মরশুমের শেষটা এমনই হওয়ার কথা ছিল আমাদের। সারা মরশুম আমরা যে পরিশ্রম করার জন্য, তা মরশুমের শেষে ভাল কিছু পাওয়ার জন্যই। আমরা যদি ছ’নম্বর জায়গাটা সুরক্ষিত করতে পারি, তা হলে সেই ভাল জিনিসটাই পাওয়া যাবে”। 


তবে কাজটা যে মোটেই সোজা হবে না, তা খুব ভাল করেই জানেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “অনেকগুলো দলই এই জায়গাটার জন্য লড়াই করছে এবং প্রত্যেক দলই মনে করে এই জায়গাটা তাদের প্রাপ্য। তাই আমাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফোকাসড থাকতে হবে এবং বেঙ্গালুরুর মতো একটা ভাল দলকে হারাতে গেলে ভাল খেলতে হবে। ওদের দলে ভাল ভাল ফুটবলার আছে। আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। সেই অনুযায়ীই প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। তবে প্রস্তুতির জন্য বেশি সময় পাইনি আমরা। কেরল থেকে সদ্য ফিরেছি। তবে সারা বছর ধরে যে পরিশ্রম করেছে ছেলেরা, তারই প্রভাব পড়ছে এখনকার পারফরম্যান্সে”। 


এ মরশুমে প্রথমবারের মুখোমুখিতে বেঙ্গালুরু এফসি তাদের হারিয়েছিল। রবিবার ঘরের মাঠে তার প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পাবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু লাল-হলুদ কোচ তার চেয়েও অনেক বড় কিছু ভাবছেন এই ম্যাচ নিয়ে। প্রতিশোধের প্রসঙ্গ উঠতে তিনি বলেন, “প্রতিশোধের কোনও ব্যাপার নেই এখানে। আমরা দুই দলই প্লে অফে জায়গা তৈরি করার জন্য ম্যাচটা খেলব। আমরা তো এই ম্যাচটাকে ফাইনালের মতো ধরছি। আমার বিশ্বাস, ওরাও একে ফাইনাল হিসেবেই নিচ্ছে। তাই নিজেদের সেরাটা দিয়ে সাফল্য অর্জন করতে হবে। কেরলর বিরুদ্ধেও এটাই হয়েছিল। ম্যাচটা কঠিন ছিল। আশা করি, এই ম্যাচেও পারব”। 


দলের ছেলেদের প্রশংসা করে কুয়াদ্রাত বলেন, “এই যে আমরা শেষ দিকে প্লে অফে জায়গা অর্জন করার জন্য লড়ছি, এর আগে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল এই পরিস্থিতিতে কখনও আসতে পেরেছে বলে মনে হয় না। গত কয়েক মরশুমে তো আমাদের শেষদিকে আর কিছু পাওয়ার থাকত না। এ মরশুমে তো সামনে কিছু আছে। একটা ট্রফি জিতেওছি আমরা। এর মানে আমরা ভবিষ্যতের জন্য কিছু করতে পারছি। তাই আমি মরশুমের শেষটা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী আমি”। 


রবিবারের ম্যাচে সুনীল ছেত্রীকে আটকানো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গলের। এই কাজটা করতে হবে অন্যতম ডিফেন্ডার নিশু কুমারকেও। আগের দিন শততম আইএসএল ম্যাচ খেলা নিশু সুনীলকে রোখার প্রসঙ্গে বলেন, “আমি ওর বিরুদ্ধে আগেও খেলেছি। খুবই অভিজ্ঞ এবং যথেষ্ট বুদ্ধিমান। কাজটা কঠিন। কিন্তু ফুল ব্যাক হিসেবে সুনীল ছেত্রীকে রোখা আমার কাজ। সে জন্য আমি তৈরি”। 


যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা, সেই প্রসঙ্গে নিশু বলেন, 'পরের দুটো ম্যাচে আমাদের জিততেই হবে। গত ম্যাচেও আমারা জিতেছি। তাই দলের প্রত্যেকেই যথেষ্ট ইতিবাচক রয়েছে। বেঙ্গালুরু এফসি খুবই ভাল খেলছে। তবে ওদের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্য আমরা তৈরি। তাই আলাদা করে সে জন্য উজ্জীবিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই সবাই উজ্জীবিত হয়ে রয়েছে। কাল ম্যাচটা খেলতে নামার জন্য আমিও খুব উত্তেজিত।' (তথ্যসূত্র - আইএসএল মিডিয়া)


আরও পড়ুন: নিজেই নিজেকে বিশ্বের সেরা বলেন, প্রীতির দলকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছেন শশাঙ্ক




আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।