নয়াদিল্লি: তাঁর ভারতে আগমন নিয়ে হইচই ছিল। ভারত সফর শেষ করে সেই লিওনেল মেসি ফিরে গিয়েছেন। ভারত সফরের স্মৃতি নিয়ে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ১ মিনিটের ভিডিও আপলোড করলেন মেসি। কিন্তু সেখানে যুবভারতীর কোনও ছবি থাকল না! রইল শুধু লেকটাউনে তাঁর মূর্তি উন্মোচনের ৩ সেকেন্ডের ছবি। সঙ্গে মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানের ২-১টি ঝলক। বাকি ৫৭ সেকেন্ড ধরে হায়দরাবাদ, মুম্বই এবং দিল্লির ছবি। এর জেরে আরও একবার কলকাতার মুখ পুড়ল বলেই মনে করছেন অনেকে।
লিওনেল মেসির সফরে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থেকেছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন! ভারতীয় ফুটবলের মক্কা বলে পরিচিত কলকাতার ভাগ্য়ে জুটেছে লজ্জা! আর এবার স্বয়ং লিওনেল মেসির পোস্ট করা ভিডিও-তেও জায়গা পেল না যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। ভারত সফর থেকে ফিরে, এক মিনিটের এই ধন্যবাদ জ্ঞাপনের ভিডিও পোস্ট করেছেন মেসি! কিন্তু, সেখানে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের কোনও ছবি নেই! ১ মিনিটের ভিডিও-তে কলকাতার অংশ বলতে শুধুই লেকটাউনে শুধুই তাঁর মূর্তি উন্মোচনের ছবি!তাও মেরে কেটে ৩ সেকেন্ড! এছাড়া গোটা ভিডিও জুড়ে শুধুই হায়দরাবাদ, মুম্বই ও দিল্লিতে কাটানো বিভিন্ন মুহূর্ত! কোথাও নেই যুবভারতী! যার জেরে কলকাতার মুখ পুড়ল বলেই মনে করছেন ক্রীড়াবিদদের অনেকে! যা নিয়ে প্রাক্তন ফুটবলাররহিম নবি বলেছেন, 'এটা সত্যিই দুঃখের বিষয়। খুবই খারাপ। প্রথম কলকাতায় এসেছেন তারপর অন্য জায়গায় গিয়েছেন। আমি নিজে ছিলাম। এখানে শুধু মূর্তি ছাড়া কিছু নেই। ওনার যা লেভেল তার সঙ্গে এই ঘটনাগুলো যায় না, তাই জন্যই দেয়নি।' কলকাতায় সুজিত বসু, অরূপ বিশ্বাস হায়দরাবাদে রাহুল গান্ধী, রেবন্ত রেড্ডি। মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফডণবীশের সঙ্গে দেখা করলেওকোনও রাজনীতিবিদের সঙ্গে ছবি নিজের ভিডিওতে রাখেননি মেসি। এক মিনিটের এই ভিডিও পোস্ট করে মেসি লিখেছেন,'নমস্তে ভারত। দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও কলকাতার সফর অভাবনীয় ছিল। উষ্ণ অভ্যর্থনা, দারুণ আতিথেয়তা এবং আমার গোটা সফর জুড়ে এত ভালবাসা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি আশা করি, ভারতে ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে।' অর্থাৎ কলকাতায় সবার প্রথমে এলেও, মেসির পোস্টে তাঁর উল্লেখও রয়েছে বাকি তিন শহরের পর! বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'মেসির ভিডিওতে পশ্চিমবঙ্গ থাকবে কী করে! বরং মেসি তো পশ্চিমবঙ্গের ওই Messy ভিডিও না দিয়ে কিছুটা পশ্চিমবঙ্গের মান রক্ষা করেছেন। মেসি বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। বাংলার সম্মান রক্ষা করেছেন। বাংলার সম্মানকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন মাননীয়া এবং তাঁর ভক্তরা।'তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, 'এই পরিস্থিতি তো তৈরি করা হয়েছে। যাতে ওকে নিরাপত্তারক্ষীরা ঘিরে রাখে। যাতে দর্শকরা মেসিকে না দেখতে পায়।'
এখন প্রশ্ন হল, যুবভারতীকাণ্ডে কলকাতার ভাবমূর্তিতে যে দাগ লাগল, তা কি মোছা যাবে?