কলকাতা: আইএসএল ফাইনালে (ISL Final) তাদের হারিয়ে কাপ জেতার জন্য মুম্বই সিটি এফসি-কে অভিনন্দন জানালেন মোহনবাগান এসজি-র কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস (Antonio Lopez Habas)। ফাইনালে যে তাঁর দল একেবারেই ভাল খেলতে পারেনি এবং মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে সব দিক থেকেই পরাস্ত হয়েছে, তাও মেনে নেন তিনি।


শনিবার যুবভারতী ক্রীড়ঙ্গনে আইএসএল ফাইনালে প্রথমে ৪৪ মিনিটের মাথায় জেসন কামিংসের গোলে এগিয়ে যায় কলকাতার দল। দ্বিতীয়ার্ধে, ৫৩ মিনিটের মাথায় জর্জ পেরেইরা দিয়াজ সমতা আনেন এবং ৮১ মিনিটের মাথায় বিপিন সিং ব্যবধান বাড়ান। বাড়তি সময়ের সাত মিনিটের মাথায় জাকুব ভইতুস তাদের জয় সুনিশ্চিত করে।


তিন সপ্তাহ আগেই লিগের শেষ ম্যাচে যে মুম্বইকে নিজেদের মাঠে হারিয়ে শিল্ড জিতে নিয়েছিল মোহনবাগান এসজি, সেই মুম্বই এদিন নিজেদের পারফরম্যান্সে অভাবনীয় উন্নতি ঘটিয়ে কাপ জিতে মাঠ ছাড়ে। প্রথমার্ধে মোহনবাগান কিছুক্ষণের জন্য দাপুটে পারফরম্যান্স দেখালেও দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় অতিথিরা এবং বাজিমাত করে।


হারের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হেড কোচ হাবাস বলেন, “আমরা এগিয়ে গেলেও প্রতিপক্ষের চেয়ে ভাল খেলতে পারিনি। মুম্বই আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। সে জন্য ওদের অভিনন্দন। ওদের আমরা চাপে ফেলতেই পারিনি। মুম্বই বরং অনেক সোজা ও স্বাভাবিক ফুটবল খেলেছে। আমরা ওদের চাপে ফেলার সুযোগই পাইনি। ওরা ডিফেন্স করার পর বারবার আক্রমণে উঠেছে। কিন্তু আমরা ওদের আটকাতে পারিনি। নিজেদের বক্সে ওদের আটকানো উচিত ছিল আমাদের। কিন্তু আমরা তা পারিনি। এটা ওদের কৃতিত্ব অবশ্যই। আমাদের আরও সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে খেলা উচিত ছিল”।


কোচের ধারণা, নাগাড়ে চাপ নিয়ে খেলে মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন তাঁর দলের খেলোয়াড়রা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা নাগাড়ে পাঁচটা ফাইনাল খেলেছি। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে, বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে, লিগের শেষ ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে, তার পরে ওডিশার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে এবং আজ ফাইনালে। আমাদের ছেলেরা তাই মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া মুম্বই খেলার মাঝে একাধিক ভাল ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা আমরা পারিনি”।


গত ম্যাচের তুলনায় এ দিনের পারফরম্যান্সের তফাৎ নিয়ে বলতে গিয়ে এ দিন হাবাস বলেন, “অন্যদিন আমাদের ছেলেরা রক্ষণ ও আক্রমণ দুইই একসঙ্গে করেছে। কিন্তু আজ আমাদের ছেলেরা আক্রমণে উঠলে আর রক্ষণে ঠিকমতো নামতে পারেনি বা রক্ষণে নামলে ঠিকমতো আক্রমণে উঠতে পারেনি। এই সমস্যাই হয়েছে। মনবীর, লিস্টনদেরও নেমে এসে ডিফেন্স করতে হয়েছে। কারণ, রক্ষণে নির্দিষ্ট কেউ দায়িত্ব নিতে পারেনি”।


অনিরুদ্ধ থাপার পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে হাবাস বলেন, “থাপা এর আগে বিভিন্ন পজিশনে খেলেছে। কিন্তু আজ ওকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া ছিল। ও তা পালন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দলের গতিতে বদল আনার জন্য ওকে বসিয়ে সহালকে নামাই। ফুটবলে তো এ রকমই হয়। যখন যাকে দরকার হয়, তাকে নামাতে হয়”। এ দিন ৭০ মিনিটের পর থাপারে বসিয়ে সহালকে নামিয়েও কোনও লাভ হয়নি দলের।


সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দুঃখ প্রকাশ করে হাবাস বলেন, “সমর্থকদের জন্য খারাপ লাগছে। আজ জয় দিয়ে শেষ করে ওদের কাছে বিদায় নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হল না। হার-জিত নিয়েই ফুটবল। ফাইনাল পর্যন্ত দলের ছেলেরা অনেক লড়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত ম্যাচ ওদের মানসিক ভাবে ক্লান্ত করে তুলেছে”।


আরমান্দো সাদিকু এ দিন কার্ড সমস্যায় থাকায় খেলতে পারেননি। তিনি থাকলে হয়তো আক্রমণে গতি আসত বলে মনে করেন সবুজ-মেরুন কোচ। বলেন, “সাদিকু থাকলে হয়তো আমরা আক্রমণে আরও তীব্রতা আনতে পারতাম। কিন্তু এটা তো আমাদের হাতে ছিল না। এটা ঠিকই যে আরমান্দো জেসনের চেয়ে বেশি আগ্রাসী”।


(তথ্য: আইএসএল মিডিয়া)


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: যুবভারতীতে স্বপ্নভঙ্গ! পিছিয়ে পড়েও মোহনবাগানকে ৩-১ উড়িয়ে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি