হরিয়ানা: একটা গোটা গ্রাম স্বপ্ন দেখছে। একটা পদকের স্বপ্ন। অলিম্পিক্সে খেলতে গিয়েছেন গ্রামের গর্ব রবি ধাইয়া। রেসলিংয়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যাবে তাঁকে। হরিয়ানার সোনেপথ জেলার নহরি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষের একটাই স্বপ্ন তাঁদের গ্রামের যুবক যেন এবার একটা পদক নিয়ে আসেন। তাহলেই গ্রামের অবস্থা কিছুটা বদল হবে।
জলের সমস্যা, বিদ্যুতের সমস্যায় জেরবার গ্রামবাসীরা। সারা দিনে হয়তো মাত্র ২ ঘণ্টা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে। এলাকায় ভাল একটা হাসপাতালও নেই। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের আশা যদি টোকিও থেকে তাঁদের গ্রামের ছেলে একটা পদক আনে, তাহলে সবার নজরে পড়বে এই গ্রাম। তখন হয়তো কিছুটা উন্নতি হবে এলাকার।
রেসলিংয়ে এবার ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন নহরি গ্রামের এক কৃষকের ছেলে রবি। এর আগেও এই গ্রাম থেকে ২ জন অলিম্পিক্সে খেলে এসেছেন। ১৯৮০ সালে মস্কো ও ১৯৮৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলসে খেলেছেন মহাভীর সিং। এরপর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক্সে খেলেন অমিত ধাইয়া।
২৫ বছরের রবির পদক জয়ে কীভাবে বদলাবে গ্রামের ছবি? তারও একটা বিশেষ কারণ রয়েছে। এর আগে দেশের হয়ে ২ বার অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়া মহাভীর সিংয়ের ইচ্ছে ছিল যে এলাকায় একটা পশু চিকিৎসালয় বা হাসপাতাল গড়ে তোলা হোক। সেই ইচ্ছেকে সম্মতি জানিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সেই গ্রামে একটি পশু হাসপাতাল গড়ে তুলেছিলেন।
গ্রামবাসীদের আশা এবার যদি রবি পদক নিয়ে আসেন, তবে ফের একবার নহরি গ্রাম আলোচনায় উঠে আসবে। আর তাহলেই বদলাতে পারে ছবিটা। এই গ্রামে মোট ৪০০টি পরিবারের বাস।
গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান সুনীল কুমার ধাইয়া বলেন, ‘এই গ্রাম দেশকে তিনজন অলিম্পিয়ান দিয়েছে। আমরা আশাবাদী যে রবি সাফল্য পাবে টোকিওতে ও পদকও জিতে নিয়ে আসবে। তাহলেই গ্রামের উন্নয়ণও শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনও ভাল হাসপাতাল নেই। আমাদের চিকিৎসার জন্য অনেক দূরে দূরে সোনেপথ ও নরেলায় যেতে হয়। এখানে একটা স্টেডিয়ামও নেই। মিনি স্টেডিয়াম একটা রয়েছে, তবে তাতে কোনও ম্যাট নেই, কোচ নেই। আমাদের এখানে পরিকাঠামো একটু উন্নতি হলে বাচ্চা ছেলে, মেয়েগুলোও ভালভাবে থাকতে পারবে।’
রবি তার গ্রামবাসীর ইচ্ছেপূরণ করতে পারেন কিনা, তা এখন দেখার।