মেলবোর্ন: ক্রিকেটকে বলা হয় মহান অনিশ্চয়তার খেলা। কেন বলা হয়, রবিবার ফের একবার তা প্রমাণিত হয়ে গেল। এও প্রমাণিত হয়ে গেল যে, ক্রিকেট যেমন কেড়ে নেয়, সেরকম ফিরিয়েও দেয়।


৬ বছর আগের ইডেন গার্ডেন্সের (Eden Gardens) এক রাত। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ওভারে ম্যাচ জেতার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। বেন স্টোকসের (Ben Stokes) হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক অইন মর্গ্যান। ব্যাট করছিলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। স্টোকসের ওভারের প্রথম চার বলে চার বিশাল ছক্কা মেরে ইংরেজ শিবিরে অন্ধকার নামিয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এপ্রিল রাতের সেই ইডেন দেখেছিল ক্যারিবিয়ানদের বিজয়োল্লাস। আর দেখেছিল এক অন্ধকার চোখ-মুখের ক্রিকেটারকে। হাঁটু গেড়ে পিচের ওপর বসে।


কোথায় সেই ব্রিটিশ সুলভ ঔদ্ধত্য! এ যেন আত্মসমর্পণের ছবি। সতীর্থরা পাশে এসে কাঁধে টোকা মারার পর যাঁর সম্বিৎ ফিরেছিল যেন। শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের দিকে দেখতে দেখতে মাঠ ছেড়েছিলেন বিধ্বস্ত স্টোকস।


মাঝে ২ বছর আগে দেশকে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছেন স্টোকস। বিশ্বজয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন ইংরেজ অলরাউন্ডার। কিন্তু তবু, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে কার্যত জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা কি ভুলতে পেরেছিলেন তিনি?


হয়তো পারেননি। যে শাপমুক্তি ঘটল মেলবোর্নে। পাকিস্তানের ১৩৭/৮ তাড়া করতে নেমে যখন প্রবল চাপে ইংল্যান্ড ইনিংস, হাল ধরলেন স্টোকস। পাক বোলারদের আগুনে স্পেলও তাঁকে টলাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত রইলেন স্টোকস। আর নিশ্চিত করে দিলেন যাতে, টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বারের জন্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।


 




মহম্মদ ওয়াসিমের বলে উইনিং স্ট্রোক খেলেই হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন স্টোকস। সেলিব্রেশনে যেন বেরিয়ে এল ৬ বছরের গোপন যন্ত্রণা। যা দেখে রবি শাস্ত্রী পর্যন্ত ধারাভাষ্য দেওয়ার ফাঁকে বলে উঠলেন, 'ইডেনে পারেনি। মেলবোর্নে পারল স্টোকস।'


আরও পড়ুন: শেষবেলায় ফের নায়ক স্টোকস, পাক বধ করে টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্য়ান্ড