কানপুর: আজাজ পটেল (Ajaz Patel) ও রচিন রবীন্দ্র (Rachin Ravindra)। এই দুই নাম হয়তো অনেকদিন ভুলতে পারবেন না ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।


আজাজের জন্ম মুম্বইয়ে। পরে পরিবারের সঙ্গে দেশ ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি দেন। আজাজের বয়স তখন মাত্র ৮ বছর। সেখানেই ক্রিকেট শিক্ষা। প্রথমে পেসার ছিলেন। যখন পেস বোলিং ছেড়ে স্পিনার হন, তখন আজাজের বয়স ২০ পেরিয়ে গিয়েছে।


৩৩ বছরের আজাজের চেয়ে ঠিক ১১ বছরের ছোট রচিন। তাঁর জন্ম ওয়েলিংটনে। কিন্তু বাবা ও গোটা পরিবার ক্রিকেটের ভক্ত। আর সচিন তেন্ডুলকর ও রাহুল দ্রাবিড়কে কার্যত দেবতা জ্ঞানে পুজো করেন। দুই কিংবদন্তিকে নিয়ে বাড়িতে এমনই উন্মাদনা যে, ছেলের নামকরণের সময়ও তার প্রভাব পড়েছিল। সচিন ও রাহুলের নামের সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে তাই ছেলের নাম রাখা হল রচিন।


কানপুরের গ্রিন পার্কে পঞ্চম দিনের ধুলো ওড়া পিচে শেষ উইকেটে দুরন্ত লড়াই করে নিশ্চিত পরাজয় রুখে দিলেন নিউজিল্যান্ডের (Ind vs NZ) দুই টেল এন্ডার - আজাজ পটেল ও রচিন রবীন্দ্র। ৫২ বলে অবিচ্ছেদ্য ১০ রানের পার্টনারশিপ গড়লেন। এবং সেটা এমন একটা সময়, যখন আলো পড়ে আসছে। প্রত্যেক ওভারের শেষে লাইটমিটার বার করে আলো মাপছেন আম্পায়াররা। আর ক্ষুধার্ত দেখাচ্ছে ভারতের স্পিন ত্রয়ী আর অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজা ও অক্ষর পটেলকে।


রচিন ১ ঘণ্টা ৩১ মিনিট ক্রিজে ছিলেন। ৯১ বলে অপরাজিত রইলেন ১৮ রান করে। যে ইনিংস কোনও সেঞ্চুরির তুলনায় কম নয়। আর আজাজ ক্রিজে কাটালেন ২৯ মিনিট। হয়তো ক্রিকেট মাঠে জীবনের সেরা আঘ ঘণ্টা হয়ে রইল আজাজের। ২৩ বলে ২ রানে অপরাজিত রইলেন তিনি।


যাবতীয় প্রতিকূলতা সামলে নিউজিল্যান্ডকে ১৬৫/৯ স্কোরে পৌঁছে দেন আজাজ ও রচিন। ভারতের বিরুদ্ধে প্রবল চাপের মুখেও টেস্ট ম্যাচ ড্র করল নিউজিল্যান্ড। সেই সঙ্গে দেখিয়ে দিল, কেন তারা বিশ্বের সেরা টেস্ট দল। কেনই বা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট রয়েছে তাদের দখলে।


আরও পড়ুন: স্ত্রী ডেঙ্গি আক্রান্ত, মাঠে নেমে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে মন জিতলেন ঋদ্ধিমান


আর রচিন জ্বলে উঠলেন রাহুল দ্রাবিড়ের সামনে। প্রতিপক্ষ কোচকে যদিও এই পারফরম্যান্সে আপ্লুত করবে না। কারণ, তাঁর নামাঙ্কিত ক্রিকেটারই যে তাঁর দলের জয়ের স্বপ্ন ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি, রাহুল দ্রাবিড় তো অন্য ধাতুতে গড়া! রচিনের বাইশ গজে নাছোড় লড়াই কি তাঁকেও পুরনো দিনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল না! যখন দেশের হয়ে এভাবেই মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ম্যাচের রং পাল্টে দিতেন তিনি।